মানুষ- সমাজ

সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পাঁচ বছর আজ

নরসুন্দা ডটকম   এপ্রিল ২৪, ২০১৮
রানা প্লাজা

আজ ২৪ এপ্রিল। দেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। ২০১৩ সালের এই দিনে সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজার একশ’ ৩৬ জন শ্রমিকের করুণ মৃত্যু হয়। আহত হন কয়েক হাজার শ্রমিক। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে রানা প্লাজার সামনে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান।
এসময় নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরাও বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া নিহত শ্রমিকদের স্মরণে বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাভারের সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান। এসময় রানা প্লাজার সামনে নিহত ও আহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন ও রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার ফাঁসির দাবি জানান।

রানা প্লাজায় স্ত্রী হারিয়েছেন স্বামীকে। স্বামী হারিয়েছেন প্রিয়তমা স্ত্রীকে। ভাইকে ফেরত না পাওয়ার বেদনায় কাতর বোন। বোনের লাশের প্রতীক্ষায় ভাই। সন্তানের মৃত্যুশোকে ব্যাকুল মা-বাবা। ছোট্ট অবুঝ শিশুর কণ্ঠে ‘মা-বাবার’ ডাক। তবে মা-বাবার স্নেহের বন্ধন ছিন্ন হওয়া শিশুরা এখনও জানে না, কী অমূল্য সম্পদ তারা হারিয়েছে।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে ছিন্নভিন্ন হয়েছে একেকটি সংসার। টানাপড়নের এসব সংসারে কমতি ছিল না সুখের। আহত শ্রমিকের কেউ কেউ আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। শোক ভুলে শুরু করেছেন নতুন জীবন। আবার দুঃসহ সেই বেদনাকে ভুলতে পারেননি অনেকে। চোখে অশ্রু তার হৃদয়ে স্বজনহারা বেদনার ভার নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।

এদিকে রানা প্লাজার পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিহত ও আহত শ্রমিকদের স্মরণে সাভারের অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় রানা প্লাজার সামনে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে অবস্থিত রানা প্লাজায় তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা প্রতিদিনের মতো সকাল আটটায় হাজির হন নিজ নিজ কর্মস্থলে। উৎপাদনও শুরু হয় নির্ধারিত সময়ে। হঠাৎ সাড়ে নয়টার দিকে বিকট শব্দ। আশপাশে উড়তে থাকে ধুলো-বালি। ধসে পড়ে রানা প্লাজা। শুরু হয় আহত শ্রমিকদের আহাজারি। উদ্ধারে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন সেনা ও নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। চলে বিরতিহীন উদ্ধার অভিযান।

About the author

নরসুন্দা ডটকম