কবিতা সাহিত্য

কবিতা ভাবনা, এখন নয়

মাহবুব রহমান   অক্টোবর ১, ২০১৭
মাহবুব রহমানের কবিতা

অলংকরনে- নাহরীন জায়ানা ও কবি

মাদের দুর্ভাগ্য এটাই যে, আমাদের একজন ম্যাক্সিম গোর্কি নেই। যিনি বিশ্বখ্যাত রুশ লেখক ম্যক্সিম গোর্কির মত নির্ভার কলমে চিত্রিত করতে পারতেন বর্তমান বিশ্বের ক্ষমতাধর পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের পাকস্থলীর ক্ষুধা ও স্পর্ধার বিবিধ কারণ। গোর্কির কলমে লেখা সেই বিপন্ন সময়কে উপলব্ধি করে গোর্কির চোখেই যেন দেখতে পাই বিচিত্র কৌশলে এখনো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে হাঙরের মতো ধারালো দাঁতে কীভাবে মানবিক মূল্যবোধগুলো চিবিয়ে চিবিয়ে গ্রাস করছে একবিংশ শতাব্দীর নব্য পুঁজিতন্ত্র। গোর্কি তাঁর বিদেশ ভ্রমনের স্মৃতিচারনে মানবিক জীবনবোধের বিরুদ্ধে পুঁজিতান্ত্রিক লোভী শাসন ব্যবস্থার কুট-কৌশলী চরিত্রগুলোকে চিত্রিত করেছিলেন। আমাদের দুর্ভাগ্য এটাই যে, গোর্কি’র জন্মভূমের রক্ষকেরা আজ সেই পাকস্থলী পূরনের লোভে হয়তো দিকভ্রান্ত। অবশ্য পুজিতান্ত্রিক স্বার্থের পরিধি বিস্তৃত ও ব্যপৃত হয়ে সর্বদিকেই তাদের ক্ষুধার্ত শ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। যার পরিণামে নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ সভায় দেখছি কতিপয় ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের চাতুর্যময় পক্ষপাতিত্ব। ‘রোহিঙ্গা ইস্যুটি’তে তাদের মানবিক মূল্যবোধের নানা যুক্তি ও পক্ষাবলম্বন বিষয়টি প্রকট হয়ে উঠেছে। সন্দেহ নেই যে মানবতা, মানবিকতা ও নৈতিকতার বিপক্ষে দাঁড়াতে শক্তিধর (?) রাষ্ট্রসমূহের এসব ফন্দি-ফিকির। আর কিছু না হোক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর এহেন ভূমিকা জগতের সকল সাধারন বিপন্ন নিরাপরাধ জনগোষ্ঠীকে হতচকিত করেছে বৈ-কি।

চীনের প্লাস্টিক শিল্প বিপ্লব (এভাবে দেখা সংগত), তাদের কথিত প্রযুক্তির আগ্রাসন, পার্শবর্তী দেশগুলোর তেল- গ্যাস সহ সকল খনিজ সম্পদ ও বাণিজ্য রীতির দিকে লালসাপূর্ণ কুট-কৌশল চীনের প্রাচীন ও নিকট অতীতের সময়গুলোকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যখন আফিমে বুঁদ হয়ে থাকা চীনা জনগোষ্ঠী শোষন পীড়নের ঐ দুরাবস্থা থেকে উদ্ধার পেতে হৃদয়ে ধারন করেছিল কার্ল মার্কস্ এর মানবিক বিপ্লবের বাণী- মনুষ্যত্বের অদম্য ঐক্য ভাবনা, জয়গান। এখন তারাও দেখছি পুরনো খোলসে ফিরে গিয়ে পুঁজিতান্ত্রিক ক্ষুধায় স্পর্ধীত ও চাতুর্য্যপূর্ণ মানবতাবাদের দোহাই আউড়াচ্ছেন। এতএব, কোথায় যাবে নিপীড়িত মানুষ?

কবি গুরু রবীন্দ্রনাথের ভাষায়.. যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলরে.. নীতিতে অটল ‘মানবতার জননী-কেই এই হাল ধরে রাখতে হচ্ছে। জয়ী হবেন তিনিই। কেননা সকলেই জেনেছেন, উৎপীড়ক শাসকদের চিরাচরিত বেনিয়ানীতি, মরনাস্ত্রের হুংকার, মানবিকতার বিরুদ্ধে যে কোন চাতুর্য অথবা আস্ফালন পরাস্ত হতে বাধ্য। যুগে যুগে এটাই ঘটেছে। সীমান্ত পারের লক্ষ লক্ষ উদবাস্তুদের নিয়ে আজও যারা অমানবিক কুটনৈতিক কৌশলে আশ্রীত থাকবেন, তাদের পরিণতি স্বয়ং ম্যাক্সিম গোর্কি তাঁর কলমে ধ্বনিত করেছেন, এই বলে যে, পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার ক্ষুধার্ত পাকস্থলী পুরণে মানবতা চিরকাল খাদ্য হতে পারে না। কারো না কারো জাগ্রত মানবিক আহ্বানে এ ব্যবস্থাটির অবসান হবে।
পৃথিবীতে শুভবুদ্ধি ও মানবিক চেতনার মানুষের সংখ্যাই অধিক। এই মানুষগুলোই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিপর্যস্ত মানবিকতার পক্ষে সমর্থন যোগাবে, যে সমর্থন নিয়ে কোন একক নেতৃত্ব বিপন্ন মানবতার রক্ষাকর্তা হিসাবে চিরগণ্য হবেন। সেই দিনগুলো নিশ্চয়ই খুব দুরে নয়, যখন মানবতা ও মানবিকতার জয়গান এই বাংলা থেকেই ধ্বনিত হতে শুরু করেছে।

 


ভালোবেসে বাঁচি সকলেই

উড়ন্ত আকাশ নেমে আসুক মাটির পৃথিবীতে
গর্ভবতী হোক মৃত্তিকার উষ্ণ শরীর
প্রসবিত স্বপ্নীল সবুজভুমে
আমরা বাঁচি সুখ-দুঃখের সংসারে।

উর্বশী নদীদের অচেনা মনে হয়
তরঙ্গে উত্তাল খিলখিল হাসী
প্রেমে কিংবা অবজ্ঞায় ভাসায়
কুল-উপকুলে-ব্যর্থ মনোভাবনায়।

দুর্যোগ-উৎকন্ঠা-স্বপ্রেমের ভরসা
যুগলচিত্র হয়ে ভাসুক নয়নে
নক্ষত্রের বুকে জ্বলন্ত ফোয়ারা
প্রজ্জ্বলিত ও চিহ্নিত করুক মনোলোক, ভালবেসে বাঁচি সকলেই ।

১২.০৭.২০১৭
অনিদ্রায় কবিতা

কতো রক্তক্ষরণ
ধুঁয়েছে প্রিয়তমের নাম।
কতো বৃষ্টিকে অতিক্রম করেছে অশ্রুধারা
আঁধারবিদ্ধ বক্ষে দিনযাপনের রীতি
অনিদ্রায় পুরে যাওয়া বিবর্ণ স্বপ্নভুমে ফেরাতে পারিনি পৃথিবীর প্রাণ।

ভালোনেই তবুও বলিনি কখনো
ভালোআছি, বেশ আছি।
ধ্বংস্তুপের হৃদপিন্ডে যেভাবে নিভে থাকে বিধ্বস্ত নগর।

০২.০৭.২০১৭
গুলিবিদ্ধ পায়রার বুক হয়ে ওঠে

শব্দগুলো যেন ব্যক্তিগত না হয়
স্বীয় দুঃখ ক্ষোভ কিংবা বিষন্নতা
পংক্তিগুলোতে স্পর্শ না করুক, ইচ্ছে ছিলো।

ইচ্ছে ছিলো দেবাজ্ঞলীর পবিত্রতায় প্রতিটি প্রহর নির্ঝরিত হোক এ ভুবনে
কষ্টগুলোকে ভালোবাসার ইচ্ছে ছিল বেদনার বেদীতে দাড়িয়ে
নিঃসহায় কোন শিশুমুখ যেন চিত্রিত না হয় শব্দগুচ্ছে।

ইচ্ছেমত হয় না কিছুই, হতে পারতো না ?
প্রশ্নাতীত মানুষগুলো অসুন্দরে হাড়িয়ে যায় !
অসুন্দর মুখগুলো কেবলই ছাড়খার করে সংসার !
স্বপ্নগুলো গুলিবিদ্ধ পায়রার বুক হয়ে ওঠে, বার বার।

২২.০৯.২০১৭


শরনার্থী যখন মানুষের পরিচয়
শরৎ এসেছে ভিরূ পায়ে
শিশির ও অশ্রুজলের প্রচ্ছদে কবিতার আর্তস্বর
সীমান্তপারে মানব মিছিল- উৎকন্ঠ রক্তাক্ত প্রহর
জলে কাঁদায় ভেজা যেন শতাব্দীর করুন উপহাস !

মানুষের এখন অনেক নাম অনেক পরিচয়
দুঃখীনি-অনাথ-বাস্তুহারা-বুলেটবিদ্ধ শরনার্থী।
আকাশ কিংবা মেঘ- মেঘ কিংবা জলধারা
পাহাড় কিংবা ঝর্নাধারা- সকলের নাম অপরিবর্তীত
তখন শরনার্থী হয় মানুষের পরিচয়, বিষন্নতার নাম।

সকল কবিতার শরীরে জলে ভেজা মেঘ
কবিতার সকল হৃদয়ে আর্তনাদ
দুঃস্থ মানুষের পাশে অবিচল হেটে যাওয়া
ভালোবেসে অন্তরে দিতে আশ্রয়।

২১.০৯.২০১৭
সমুদ্র যাচ্ছে উড়ে

সমুদ্র যাচ্ছে উড়ে
উড়ছে বৃষ্টিভেজা কোমল কমলা রোদ
পলাতক পাখির পালক
উচ্ছ্বাসহীন স্পর্শগুলো
অতীতের প্রচ্ছদে এতদিন যা কিছু লুকোনো ছিল।

নগর যাচ্ছে উড়ে
উড়ছে ধুলো-দীর্ঘশ্বাসের অন্তহীন অবয়ব
বৃক্ষহীন এপ্রান্তর যেহেতু নির্দয় ও উদার
টুকরো টুকরো কথা উড়ছে নক্ষত্রের পড়শী সেজে
সখ্যতা হলোনা কোথাও।

স্বপ্নগুলো যাচ্ছে উড়ে
স্বপ্নহীন মেঘের প্রবাহে- উজানে ভাঙ্গনে
গৃহত্যাগীর উদাস অবজ্ঞা পলাতক স্রোতে
ডুবন্ত সূর্যস্নান -দুঃখগুলোতে প্রথিত কৌলিন্যহীন সংসার।

সমুদ্র যাচ্ছে উড়ে
যেন পলাতক হরিণির সখ্যতা
নগর যাচ্ছে উড়ে- স্বপ্ন যাচ্ছে উড়ে
প্রবাহমান জলেস্থলে, প্রহরহীন লক্ষ্মীন্দরের ভেলায়।

১৯.০৯.২০১৭


নামগোত্রহীন শিশুদেহ

অমানবিক জন্তু স্বভাবীদের পূনরুত্থান ;
সুচি’র উদ্দেশ্যে সকল মানুষের নিন্দাবাদ।
মহান বুদ্ধ কী সহিংসায় প্রত্যয়ীদের ক্ষমা করবেন ?
চর্তুদিকে মানবতাহীন আর্তনাদ, যখন
উৎকন্ঠ জাতিপুঞ্জ, তখনও নিরুদ্বিগ্ন বেনিয়াতন্ত্র- পুঁজিবাদ !

সীমান্তপারে বর্বরতা পুনরুত্থিত, ফনা তুলেছে
পুঁতে রাখা মাইন- তাককরা মরনাস্ত্রের পাশে
জলে ভাসছে নদী- নদীতে ভাসছে সমুদ্রের ছায়া
ছায়ায় ভাসছে অসহায় মৃতদেহ পুত্র কন্যা জননী ও পিতা
ভালোবাসাহীন প্রবল স্রোতে ভাসছে নামগোত্রহীন শিশুদেহ ;
গৃহহীন পরিণামহীন মানব মিছিল
অবশেষে আশ্রিত বাংলামায়ের আঁচলে।

২৮.০৯.২০১৭

গঙ্গা-পদ্মা বিষয়ক বন্দনারীতি

প্রবল প্রবাহিনী
জলের জননী-দুঃখ বিলাসীনি
নিভৃত আত্মার শুশ্রুষা
প্রণতি ও ধ্যান অবিচল জীবন অন্বেষা
প্রবল প্রবাহধারা গঙ্গা-পদ্মা অনন্য আত্মহারা।

কতো রথে কতো পথে ঘুরে ফিরেছে যাত্রাক্ষন
অন্ধ দু’চোখ হৃদয়ে প্রদীপ জ্বেলে
মুগ্ধ দীপাবলীর হৃদপিন্ডে জ্বলজ্বল
অনন্ত স্নিগ্ধতা পবিত্র ও পবিত্রতা
সঙ্গীতের মতো তরঙ্গধারায় নির্ঝরিত প্রকৃতি
প্রাঙ্গনে স্পর্শ যার মেঘ ভেঙ্গে ঝরে।

জগৎজ্যোতি পরম করুনাধারা
অন্তহীন আলোক মেলায় জিজ্ঞাসিত ভূবনপাড়ে
গঙ্গা-পদ্মা বহুবর্ণিল ঢেউয়ের মুকুটে ভাসে
অপাপবিদ্ধ প্রেম- সংকল্পময় ভালবাসা।

১৮.০৮.২০১৭

 

 

যখন ঝুঝতে পারি

চোখের জলে না ভেসে
ভালবাসা হয়েছে বলতে পারিনা
বুকে জমাটবাধা পাথুরে শ্বাস না শুনে
ভালবেসেছি বলতে পারিনা।

দগ্ধ চৈত্ররীতিতে শৃঙ্খলিত প্রহর প্রবাহ
বুঝতে পারি আসন্ন যন্ত্রনায় প্রস্ফুটিত হবে ভালবাসার ক্ষন।

উঠোন ভেঙ্গে উড়ে যায় পাখিদের ছায়া
তৃণওষ্ঠে বিষদাহ-অযুত নক্ষত্রের নির্লিপ্ত আঁধারে
দ্রবীভূত যখন কষ্টগুলো আমার
বুঝতে পারি অবশেষে ভালবেসেছিলাম
ভালবাসতে পেরেছি নির্দয়তায় ভেজা কারো চক্ষুযুগল।

১৯.০৮.২০১৭

 

গৃহবাসী

অল্প আনন্দ ও দুঃখের উপর দাড়িয়ে
গড়ে ওঠে ভালবাসা
বেদনার বেদীতে অর্ঘ্য বিলিয়ে
ক্ষনে ক্ষনে গৃহবাসী হই।
স্বপ্ন ও স্বপ্নহীনতা- যন্ত্রনা ও বিরহে
গড়ে ওঠে নিজস্ব ভূবন, তবু চেয়ে থাকি
ভূবন পাড়ের দীর্ঘ আঁধারে।

অশ্রুজলে স্মৃতির সাম্পান
ভাসিয়ে নেয় অচিন পথের দুরারোগ্য প্রনয়ে
ভংগুর শপথে- ভাবনার ওপারে
নির্ঝরিত অন্ধকার যখন দখল করে ব্যথিত হৃদয়।

ছোট ছোট কষ্টের শেকল
নোঙর ফেলেছে দুঃখের চরাচরে
জ্বেলেছে প্রদীপ- হাড়িয়েছে তুচ্ছ প্রহর
শরবিদ্ধ পাখীর হৃদয়ে সমর্পিত হতে হতে
গৃহবাসী হলাম বহুদিন পর।

ফিরে এসেছি, ফিরে এসেছো বলে।

১১.০৮.২০১৭

তর্কটা তাদের বিষয়ে

পার্থক্য নিশ্চিত করে
দাবী করছি, নদীদের স্বার্থপরতার বিষয়ে ;
ভাঙ্গনে নির্বাক- উপকূলে ভাসমান জীবনের দায়, তাদের নেই।

আঁধার চিবুকে প্রস্ফুটিত চুম্বন চিহ্নে
জাগ্রত নক্ষত্রের বিষয়ে আজকাল পক্ষপাতিত্ব, স্পষ্ট।
দীর্ঘশ্বাসে আচ্ছন্ন কোন সবুজভুমের কম্পনে
বৃক্ষদের তন্দ্রা ভাঙ্গালে- মৃদু তর্ক চলে, সবিনয়ে।

বিরুদ্ধ প্লাবনে ভাসমান
কোন নারীর সংস্পর্শ কিংবা তিরস্কারের বিষয়ে
প্রস্তরসম নির্বাক, তাদের বিষয়ে তর্কটা কখনো চলে না।

০৪.০৫.২০০৬


অগোছালো প্রকৃতি বিক্রয়ের প্রস্তাব

আসুন, আমাদের এই অগোছালো প্রকৃতি
বিক্রয়ের পয়সায় উদর পুর্তি করি।
সমূলে উপড়ে ফেলি প্রাচীন বৃক্ষগুলো,
মরা নদীর হৃদয়ে স্তুপকৃত বালুকণাগুলো
মাটির কান্না- শুকনো পাতার আর্তনাদ, মুঠো ভরে তুলে নেই।

আসুন, আমাদের স্মৃতিচারণ ভূমির অতীতগুলোকে নির্বিচারে ধ্বংস করি
খুবলে তুলি ইট পাথর ঘেরা বিবর্ণসব প্রাচীরগুলোকে
শকুনী যেমন মৃত শরীর থেকে নখদন্ত দিয়ে
খুবলে খায় মাংসপিন্ড- শ্বাস-বিবর্ণ প্রহরের অহংকার
আসুন, একযোগে আতঙ্কিত রাত্রীর ছায়ায় সংহার করি বনভূমি
জলজ প্রকৃতি ও অসহায় বসতির ভিটেমাটি।

অগোছালো অসুন্দর গ্রামগুলোকে উজারকরি
গৃহস্থদের ও গৃহহারাদের সুরম্য অট্টালিকার স্বপ্ন দেখাই।
চমৎকার কৌশলে উচ্ছেদে মত্ত হই পাষন্ডদের মতন
নগর পরিকল্পকদের ফন্দিবাজি মতাদর্শে উদজীবিত হয়ে
হত্যা করি পথধারের উদ্ধত-অবাধ্য-ছন্নছাড়া বৃক্ষগুলোকে
নদীনালা সমুদ্র পাহাড় জঙ্গল চা বাগান ও গভীর অরণ্যবেষ্টিত
অশোভন ঐ ছড়িয়ে থাকা জলাশয় গুলোকে।

চর্তুদিকের সমস্ত জঞ্জাল যা বহুযুগ এমনকি শত বা সহশ্রকাল ধরে
বেড়ে উঠেছে আপন গড়িমায়, অসৌন্দর্যের প্রতীকি ভাবনায়।
আসুন, দ্রুত সাফ করে গড়ে তুলি অজস্র পর্যটন পল্লী
ব্যাভিচারী সংক্রমন ঘটিযে গড়ে তুলি আকর্ষনীয় ললনা সাদৃশ্য দর্শনীয় স্থান
অন্ততঃ উলঙ্গ-অগোছালো এই ভুপ্রকৃতিকে সাজগোজ করিয়ে
উত্তেজক অবয়বের পল্লীশ্রীতে পরিণত করি
দুনিয়াজোড়া খান্দান কৌশলী বেনিয়া ক্রীড়াবিদেরা দলে দলে
ছুটে আসবেন বৈদেশিক মুদ্রায় সর্বশেষ প্রকৃতির সুষমাটুকু হরণ করে নিতে ;

ভাবুনতো, এরকম কিছু হলে
এরকম যুঁতসই একটা সুযোগ পেলে
বৈদেশিক রিজার্ভের সুচকটি তখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ?

০৩.০৮.২০১৭

মাহবুব রহমান, কবি ও সাংবাদিক।

About the author

মাহবুব রহমান