সোশ্যাল মিডিয়া

এভ্রিলের জন্য ভালবাসা : আবুল হাসনাৎমিল্টন

নরসুন্দা ডটকম   অক্টোবর ৪, ২০১৭

জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলের সুন্দরী খেতাবটি থাকবে কী না জানি না। চীনে বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় তার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা হবে কী না সেটা নিয়েও আমার কোন মাথা ব্যাথা নাই। আমি শুধু এভ্রিলকে একটা বাহবা দিতে চাই তার সাহসের জন্য। মাত্র ষোল বছর বয়সে তাকে ‘বাল্যবিবাহের’ শিকার হতে হয়েছিল। তরুণী তার প্রতিবাদে সেই বয়সেই ঘর ছেড়েছে। শুধু তাই নয়, নানান প্রতিকূলতার বিরূদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজেকে গড়েছে। আত্মবিশ্বাসী, সাহসী একটা মেয়ে বাইকে চড়ে শহরময় ঘুরে বেড়াচ্ছে, দৃশ্যটির কথা ভাবতেই আমি মুগ্ধ হই।

আপনাকে অভিবাদন এভ্রিল।

লেখকের ফেসবুক থেকে

ঢাকায় এভ্রিলের খেতাবপ্রাপ্তি নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। অনেকের মতে বিচারক নয় আয়োজকদের ইচ্ছেতেই এভ্রিল সেরা সুন্দরী হয়েছে। জানি না কোনটা সত্য। তবে আয়োজকরা যদি ষড়যন্ত্র করে এভ্রিলকে সেরা সুন্দরীর মুকুট পাইয়ে দেয়, সেক্ষেত্রে সব সমালোচনা-গালি কেন শুধু এভ্রিলের জন্যই বরাদ্দ হবে? আয়োজকদের দিকে তো কারো সমালোচনার তীর ধাবিত হতে দেখলাম না। আমাদের কেউ কেউ আরো একধাপ এগিয়ে কী অনায়াসে বলে দিলাম, আপন কৃতিত্বে নয় বরং যোনির সতীত্ব বন্ধক রেখেই এভ্রিল সুন্দরী প্রতিযোগিতার খেতাব জিতেছে।

কী আশ্চর্য! একজন নারীকে অসন্মান করার ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীবাদীরাও দেখি কম যান না।

আপনি হয়তো বলতেই পারেন এভ্রিল বিবাহিত ছিল, এবং জেনেশুনে সে সত্য গোপন করেছে। এর বিপরীতে এভ্রিলের ভাষ্য হল, ষোল বছরের এই বিয়েটি আইনের চোখে অবৈধ, তাই সে স্বীকার করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি। যেহেতু একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ব্যাপার, সেহেতু এভ্রিলের অংশগ্রহণের বৈধতা নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। প্রয়োজন হলে মূল আয়োজকদের সাথে যোগাযোগ করে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল

তবে সিদ্ধান্ত যাই হোক, এভ্রিলের বাংলাদেশী সুন্দরীর খেতাবটি থাকুক আর নাই থাকুক, তার চীনের বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার মূল পর্বে অংশগ্রহন করা হোক বা না হোক, আমার সমর্থন ও পক্ষপাত তার প্রতিই থাকবে। অভিশপ্ত বাল্যবিবাহের বিরূদ্ধে আমরা কত কথাই বলছি রোজ, অথচ এই মেয়েটি তার বিরূদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে বিজয়ী এক যোদ্ধা। আমরা তার এই সাহসী প্রতিবাদটুকুকে আজ কী অবলীলায় উপহাস করছি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সহস্র ভ্রুকুটি এড়িয়ে এই তরুণী প্রতিদিন মনের আনন্দে বাঁচে। তার দু:সময়ে আজ যদি তার পাশে না দাঁড়াই তাহলে কবি নামের এক কলংক হবো আমি।

আপনার জন্য ভালবাসা, এভ্রিল।

৪ অক্টোবর ২০১৭

লেখকঃ কবি আবুল হাসনাৎ মিল্টন।

নোট: লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া।

 

About the author

নরসুন্দা ডটকম