পাবলো নেরুদার মৃত্যু ক্যান্সারে হয়নি বলে দাবি একদল আন্তর্জাতিক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের ।তাঁরা পাবলোর দেহাবশেষ পরীক্ষা করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। চিলির রাজধানী স্যানতিয়াগোতে শুক্রবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের দল জানান, সম্ভবত পাবলোকে খুন করা হয়েছিল।
১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন কূটনীতিবিদ ও কমিউনিস্ট পার্টির সেনেটর পাবলো ৬৯ বছর বয়সে মারা যান।
পাবলোর মৃত্যুর ২ সপ্তাহ পর পুলিস রিপোর্ট দেয় যে চিলিয়ান কবির মৃত্যু ক্যান্সারে হয়েছে।
কিন্তু ২০১১ সালে পাবলোর প্রাক্তন গাড়ির চালক ম্যানুয়েল আরয়া কবির মৃত্যু নিয়ে আলাদাই কাহিনী শোনান। এক মেক্সিকান ম্যাগাজিনে সাক্ষাতকার দিতে গিয়ে ম্যানুয়েল জানান, স্যানতিয়াগোর যে বেসরকারি হাসপাতালে পাবলো চিকিৎসাধীন ছিলেন, সেখানে তাঁকে বিষ ইনঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল পেটে। ম্যানুয়েল যদিও সেই ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী ছিলেন না, কিন্তু মৃত্যুকালে পাবলো হাসপাতালের ঘরে তাঁকে সেটা বলে গিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে বিচারক মারিও ক্যারোজা নির্দেশ দেন, পাবলোর কবর থেকে দেহাবশেষ সংগ্রহ করে তা কানাডা এবং ডেনমার্কের ফরেন্সিক গবেষণাগারে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হোক। ফরেন্সির বিশেষজ্ঞরা দেহাবশেষের নমুনা পরীক্ষা করে সেখান থেকে সম্ভাব্য মারণ জীবাণু খুঁজে পেয়েছেন। পাবলো নেরুদার মৃত্যুর শংসাপত্রে তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসাবে ক্যান্সার বলা হয়েছে এবং ক্যাচেক্সিয়ার কারণে তাঁর ওজনও অসম্ভব রকমভাবে কমে গিয়েছিল বলেও শংসাপত্রে উল্লেখ ছিল। কিন্তু ফরেন্সিক গবেষকদের মতে এটা অসম্ভব। এ ধরনের জিনিস হতেই পারে না।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একজন ড. নেইলস মরলিং বলেন, ‘এটা সঠিক নয়। ক্যাচেক্সিয়ার কোনও লক্ষণই পাবলো নেরুদার দেহে পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর সময় তিনি যথেষ্ট স্থুলকায় ছিলেন। আমরা সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর এই তথ্যটি নিশ্চিত করছি যে, পাবলোর মৃত্যু কোনও সংক্রমণে হয়েছে। তবে যে জীবাণুর কারণে তাঁর এই সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে, সেই জীবাণুটি কী তা এখনও জানা যায়নি। কি ধরনের জীবাণু তা আমরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না।’ আর এক বিশেষজ্ঞ দেবি পয়নার বলেন, ‘আমাদের খুবই সতর্ক থাকতে হচ্ছে। পাবলো নেরুদার কবর থেকে পাওয়া জীবাণুগুলির মধ্যে অন্য জীবাণুও থাকতে পারে, যা সাধারণত মৃতদেহের চারপাশে থাকে। তবে আমরা হাল ছাড়ছি না, পাবলো নেরুদার মৃত্যু রহস্য সমাধান করবই।’