সোশ্যাল মিডিয়া

রুমি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাহসী এক গেরিলা যোদ্ধার নাম

নরসুন্দা ডটকম   মার্চ ২৯, ২০১৮

।। সাইদ হাসান টিপু ।।

২৯ মার্চ – শহীদ রুমির জন্মদিন : শাফী ইমাম রুমি , একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাহসী এক গেরিলা যোদ্ধার নাম।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের অসংখ্য দেশপ্রেমী তরুণ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নিজের জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে তরুণ গেরিলা যোদ্ধারা বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালাত। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিকামী তরুণ গেরিলা দলের হাতে বহুসংখ্যক পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। সাহসী এই গেরিলা যোদ্ধাদের দলটির নাম দেওয়া হয় ‘ক্র্যাক প্লাটুন’। এই ক্র্যাক প্লাটুনের একজন দৃঢ়চেতা যোদ্ধা ছিলেন শহীদ শাফী ইমাম রুমি ।

১৯৫১ সালের ২৯ মার্চ এক উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন রুমি। আদমজী স্কুল এ- কলেজ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন তিনি। তারপর ১৯৭১‌ সালের মার্চ মাসে রুমী ভর্তি হন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমান বুয়েট)। তিনি ইলিনয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে সুযোগ পেলেও যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবার পর আদর্শগত কারণে দেশকে যুদ্ধের মধ্যে রেখে বিদেশে নিরাপদ আশ্রয়ে নিজের ক্যারিয়ারের জন্য পড়তে যাননি।

রুমি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সাহসী এক গেরিলা যোদ্ধার নাম

১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল মা(জাহানারা ইমাম) কে রাজি করিয়ে ২ মে রুমী সীমান্ত অতিক্রমের প্রথম প্রয়াস চালান। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে তাঁকে ফেরত আসতে হয় এবং দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় সফল হন। তিনি সেক্টর-২ এর অধীনে মেলাঘরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এই সেক্টরটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন খালেদ মোশাররফ ও রশিদ হায়দার। প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি ঢাকায় ফেরত আসেন এবং ক্র্যাক প্লাটুনে যোগ দেন। ক্র্যাক প্লাটুন হল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা আক্রমণ পরিচালনাকারী একটি সংগঠন। রুমী ও তার দলের ঢাকায় আসার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন হামলা করা। এ সময় তাকে ঝুঁকিপূর্ণ আক্রমণ পরিচালনা করতে হয় যার মধ্যে ধানমণ্ডি রোডের একটি আক্রমণ ছিল উল্লেখযোগ্য।

১৯৭১ সালের ২৯ অগাস্ট তিনি তাঁর নিজের বাড়িতে কাটান, রুমি সহ বাসায় উপস্থিত সকল পুরুষদের সেই রাতে কনিকার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনারা। পরে আটক অবস্থায় নির্মম নির্যাতন করা হয় রুমিসহ গ্রেফতারকৃত অন্যান্য গেরিলাদের উপর। আটকের একদিন পরেই রুমি নিখোঁজ হন। ধারণা করা হয় পাকিস্তানি সেনারা তাঁকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলে। রুমিদের মতো অসংখ্য তরুণের আত্মদানের মাধ্যমেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। স্বাধীনতার পর রুমির মা জাহানারা ইমাম ‘শহীদ জননী’ নামে খ্যাত হন।

শহীদ রুমির জন্মদিনে Club Obscure এর পক্ষ থেকে রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা …
ব্যানার কৃতজ্ঞতা: সাইফুর মিশু ভাই।

সাইদ হাসান টিপু :ব্যান্ড অবসকিওর এর প্রতিষ্ঠাতা ও ভোকালিস্ট।

নোট: লেখাটি লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া।

About the author

নরসুন্দা ডটকম