তুহিন শুভ্র মন্ডল >>
এই লেখা একমাত্র বুকের গভীর থেকেই উঠে আসতে পারে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়ছিলাম বাংলাদেশের তরুণ সাংবাদিক ও লেখক ফয়সাল আহমেদের লেখা “সৈয়দ নজরুল ইসলাম : মহাজীবনের প্রতিকৃতি”।
একটা নতুন অধ্যায় যেন উদ্ভাসিত হল আমার সামনে। একটা দেশের অধ্যায়। আর সে দেশের গঠনে একজন মহাপুরুষের অবিসংবাদী অবদান।
আমরা যারা অন্য দেশে থাকি তাদের কাছে বাংলাদেশ গঠনে একটাই নাম বারবার উঠে আসে, আর সেটা হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁকে যথাযোগ্য শ্রদ্ধা ও মর্যাদার আসনে রেখেও এ কোন্ মহামানবের ছবি আঁকলেন ফয়সাল। এ লেখা বুকের গভীর থেকেই একমাত্র উঠে আসতে পারে।
তাই আমরাও পেয়ে গেলাম বাঙালি জাতির ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণঅভ্যুথান, সত্তরের নির্বাচন, আর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এক অনিবার্য নেতার অপরিসীম গৌরবময় লড়াইয়ের। তিনি ছিলেন ‘বাংলার বুলবুল’। কি যে দৃপ্ত পদচারণা, বলিষ্ঠ ভাষণ আর কর্মময়তার সংশ্লেষ আছে সৈয়দ নজরুল ইসলাম নামক এই বীরশ্রেষ্ঠর জীবনে ও যাপনে, কি গভীর আত্মত্যাগ! আমরা বিস্মিত হই আবার একসাথে শিহরিতও হই। এর মাঝেই কখন যে জেগে উঠি, জেগে ওঠে জাতির জনতা আর তার কি অপরুপ চিত্রকল্প নির্মান করেছেন তরুণ লেখক ফয়সাল আহমেদ। তা আমাদের সত্যিই অবাক করে।
আবার সৈয়দ নজরুল ইসলামের শক্তি, তাঁর প্রাণময় সম্পদ তাঁর স্ত্রী বেগম নজরুল সৈয়দা নাফিসা ইসলামের আত্মত্যাগ, মানবতা, মমতার প্রতিও ফয়সালের অনুভবী নজর। চোদ্দটি অধ্যায়ে আক্ষরিক অর্থে এ এক মহাজীবনের আখ্যান। আমরা সমৃদ্ধ হই এই আখ্যান পাঠ করে। লেখকের প্রাঞ্জল গদ্যের গঠনে আমরা চমৎকৃত হই। ইতিহাসের গভীর থেকে যারা সুবর্ণজ্যোতির আশা ও সন্ধান করে থাকেন ফয়সাল আহমেদের এই বই তাদের সেই অন্বেষণে যে আলো ফেলবে একথা নিশ্চিত করেই বলা যায়। লেখককে অকৃত্রিম শুভেচ্ছা ও অভিবাদন জানিয়ে বলতে চাই – আপনার আগামীর গবেষণাধর্মী এমন আখ্যানের জন্য এখন থেকেই কিন্ত অপেক্ষায় রইলাম। অবশ্য পাঠ্য ও সংগ্রহযোগ্য একটি বইয়ের সাথে পরিচয় ঘটানোর জন্য লেখককে পুনরায় ধন্যবাদ জানাই ।।
তুহিন শুভ্র মন্ডল : লেখক ও সংগঠক। কলকাতা,ভারত।