আমরা কেউই বড় পরিবার থেকে আসিনি, সবারই অবস্থা প্রায় একইরকম-বলতে দ্বিধা নেই যে, আমাদের রোজগারে সংসার চলে—কথাগুলো বলেছিলেন আঁখি খাতুন। তিনি বাংলাদেশ নারী ফুটবল (অনুর্ধ-১৯) দলের সদস্য।আঁখির কথায় স্বপ্ন আছে, বেচেঁ থাকার আকুতি আছে। হাজারো নারীর স্বপ্নপুরনে আঁখির এ দৌড় যেমন অনুপ্রেরণা দিবে তেমনি বেঁচে থাকার প্রশস্থ রাস্তা উন্মুক্ত করবে।
সফলতা কে না চায়? সফলতা একদিনে আসে না, এর গল্পও একদিনে তৈরি হয় না। আমার কাছে সফলতার গল্প তো স্রোতের বিপরীতে বৈঠা ধরা, ঝড়ের কবলে পড়েও টিকে থাকা কিংবা তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উঁচু চূঁড়ায় উঠার অংকের মতো, মিনিটে ৩মিটার উঠে পৌনে ৩মিটার পিছলে পরার রেকর্ড তো উহ্য রয়েছেই।
পৃথিবীর সর্বত্রই দৌড়ের হোলিখেলা চলছে। জীবনে সফলতার জন্য, অগ্রগতির জন্য, সক্ষমতা অর্জনের জন্য মানুষ সকাল থেকে রাত অবধি দৌড়ায়। দৌড় তোমাকে সফলতা এনে দেবে ঠিকই তবে ক’জন এ সফলতা পায় বলো?
আজকে যিনি সফল হয়েছেন তার পেছনের দিনগুলো পর্যবেক্ষণ করলে পাওয়া যাবে সহস্র দিনের অক্লান্ত পরিশ্রম, পরিশ্রমের এ জার্নিকেই আমরা দৌড় বলে আখ্যায়িত করি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সফলতা অর্জনের জন্য এদেশের মুক্তিকামী মানুষের ৯ মাসের দৌড়ে পাকিস্তানিরা আত্নসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল। প্রসঙ্গত বাঙলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির ঘোড় দৌড়ের ভূমিকাও ছিল মূখ্য।
প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে দেখেছি-মাটি ভেদ করে গজানো গাছটি কী উদ্ভিদের দৌড় নয়? আর পৃথিবী তো সূর্যের চারপাশে অনবরত দৌড়ছেই।
পৃথিবী সৌরজগতের গ্রহ ও সূর্যকে প্রদক্ষিন করে -এই সত্য উপস্থাপনের জন্য গ্যালিলিও কারাবরণ করেছেন,জিওর্দানো ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হলো। ১৬০০খ্রিস্টাব্দের ১৭ই জানুয়ারি বিজ্ঞানের ইতিহাসে নিষ্ঠুরতম দিন রচিত হলেও ব্রুনোই জয়ী হলেন।
দৌড়ের বহুবিধ উপকারিতাও রয়েছে, এটি ব্যায়ামের সেরা উপায়। খেলাধুলা হিসেবেও এটি বেশ জনপ্রিয়। বিশ্বব্যাপি নামি-দামি প্রতিযোগিতা হিসেবে দৌড় অভিজাত।
দৌড় তোমাকে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি দেবে। শরীর গঠন, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবে। হার্ট সুস্থ্য, হাড় শক্ত ও হার্টএট্যাকের আশঙ্কা কমাবে।ক্যালরী ক্ষয়, রক্তে শর্করা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, দুঃশ্চিন্তা ও হতাশা দূর করবে।
সফলতার দৌড়ে এগিয়ে থাকার জন্য আরো কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে।
১। হৃদয়ানোভূতি:-কথা বলতে পটু হওয়া জরুরি নয় তবে সুস্পষ্ট বক্তব্য শ্রোতার হৃদয়ানোভূতিতে স্পর্শ করুক।
২। ইন্দ্রিয়ানোভূতি:- নাক,কান,চোখ হাত ও মুখ-এগুলোকে সাধারনত ইন্দ্রিয়যন্ত্র বলা হয়।বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বলে একটা কথা আছে, ইশারা কিংবা ইঙ্গিতপূর্ন ভাষা ইন্দ্রিয়ানোভূতিতে প্রবেশ হোক।
৩। বুদ্ধিমত্তা:- বোধগম্য ক্ষমতা যাচাই করে বুদ্ধিদীপ্ত বক্তব্য পরিবেশন ও গ্রহন ।
প্রকৃতিগতভাবেই মানুষ হৃদয়,ইন্দ্রিয় ও জ্ঞান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় বিধায় এগুলোর প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা চাই ,টার্গেটকৃত ব্যক্তি বা ব্যক্তিগোষ্টি যদি নিকটস্থ অথবা ভক্ত হন তবে মৃদু ভর্ৎসনাও করা যেতে পারে এতে তিনি আরো বেশি টার্ন হবেন এবং কাজটাও তত দ্রুত আর্ন হওয়ার সম্ভবনা থাকে,ব্যতিক্রম এই যে, তোমার কথা সকলেই শুনবে এবং বিশ্বাস করবে তা কিন্তু নয়। কলম্বাস ও ভাস্কোদাগামার কথায় ধরো-তাদের সাথে কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব নাবিক ছিলেন না।কেউ খাবারের অভাবে, কেউ ইদুরে কাটা কাঠের গুঁড়ো খেয়ে আবার কেউ স্কার্ভিরোগে মারা গিয়েছিল। যে ক’জন শেষ পর্যন্ত ছিলেন তাদের মধ্যে একদল গতিরোধ, হুমকি এমনকি মৃত্যুভয়ও দেখিয়েছিলেন। কোন বাধার তোয়াক্কা না করে এগিয়েছিলেন বলেই আমেরিকা ও ভারতের জলপথ আবিষ্কৃত হয়েছিল এবং তারা আজ চিরস্মরণীয়।
