জননেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালে ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান। সেখানে তিনি যুক্তরাজ্যের পুরোনো রাজনৈতিক দল লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন এবং লেবার পার্টির সদস্যও হয়েছিলেন।
প্রবাস জীবনে তিনি আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার মধ্যে শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওয়ার পর দলের হাল ধরেন। ১/১১ পরবর্তী পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল যখন কারাগারে তখন যুগ্ম সাধারণ আশরাফ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি সংকটের মুখে পড়া আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
২০০৯ সালের জুলাইয়ে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন। বিশ্বস্ততার পুরস্কার হিসেবে ওই জাতীয় সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। পরপর দুই বার তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফকে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়।
২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন দায়িত্ব পান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে। পরে ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (০৩ জানুয়ারি) তার সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা ছিল।
গত বছরের [২০১৭ সালে] অক্টোবরে তার স্ত্রী শিলা ইসলাম মারা যান। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ১ মেয়ে, ও পাঁচ ভাই-বোন আছেন।