বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানী, নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেছেন ১৬ বছর বয়সের আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা উচিত নয়। মোবাইল ফোন যে পরিমাণ রেডিয়েশন দেয় মাইক্রোওয়েভ ওভেনও সেই একই পরিমাণ রেডিয়েশন দেয়। মোবাইল ফোনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার আসলে বিপদজনকের চেয়েও বেশি কিছু। ১৫ মিনিট মোবাইল ফোনে কথা বললে মস্তিষ্কের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রী ফারেনহাইট বেড়ে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ আরো বেশি। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে তাই মতামত দিয়েছেন, ১৬ বছর বয়সের নিচে কোনো অবস্থাতেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করা উচিত নয়। কিছুদিন পূর্বে কোয়ান্টাম মেডিটেশন হলে ‘মোবাইল ব্যবহারে সতর্কতা’ বিষয়ক মাসিক মুক্ত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহারের উপায় প্রসঙ্গে ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, মোবাইল ফোনে কথা ২০ সেকেন্ডের মধ্যে শেষ করতে পারলে সবচেয়ে ভাল। এর বাইরে প্রয়োজনে একটানা সর্বোচ্চ ৩ মিনিট কথা বলা যেতে পারে। তবে পরবর্তী ব্যবহারের আগে ১৫ মিনিট বিরতি দিতে হবে। এতে এই সময়ের মধ্যে মস্তিষ্কের তাপমাত্রা আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তিনি আরও বলেন, এখন বাংলাদেশে থাইরয়েডের ক্যান্সার, প্রতিবন্ধী শিশু জন্মগ্রহণ এবং বন্ধ্যাত্ব আগের চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। এর সম্ভাব্য প্রধান কারণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন লোকালয়ে অনিরাপদ উচ্চতায় মোবাইল ফোনের টাওয়ার স্থাপন এবং মোবাইল ফোনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার।
উক্ত মুক্ত আলোচনার সভাপতি ডা. নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা শব্দকে খুব শক্তিশালী অস্ত্র মনে করি। যেকারণে নীরব থাকা ও কম কথা বলা ভুলে গেছি। তাই হয়তো মোবাইল ফোনে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলছি। অথচ একজন মানুষ যতক্ষণ নীরব থাকেন ততই নিজের সাথে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। আমরা সবমিলিয়ে যদি আরেকটু ধীর স্থির হই, নীরবতাকে উপলব্ধি করতে শিখি, তাহলে সবাই উপকৃত হব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন বলেছিলেন, ফুলগুলি যেন কথা পাতাগুলি যেন চারি দিকে তার পুঞ্জিত নীরবতা।
উল্লেখ্য প্রতি বছর এপ্রিল মাসের শেষ বুধবার সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতন দিবস পালন করা হয়।