১৯৯০ সাল থেকে শুরু করে কমনওয়েলথ গেমসে একাধিকবার স্বর্ণ ও রৌপ্যপদক পেয়েছেন বাংলাদেশের শুটাররা। কেন শুটিংয়েই এত আন্তর্জাতিক পদক? শুটিংয়ে ভাল করার মূল কারণ হচ্ছে এটি মূলত মনোযোগের খেলা, বিবিসি বাংলাকে এমনই বলছেন ১৯৯০ সালের কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণপদক পাওয়া শুটার আতিকুর রহমান।
আশির দশকে শুটিং খেলাটায় বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে এই শুটারদের। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পদকের সংখ্যা বেশ কম। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিয়োগিতায় নিয়মিত পদক এলেও কমনওয়েলথ বা অলিম্পিকের মত ইভেন্টগুলোতে শুটিংয়ের দিকেই মানুষের প্রত্যাশা বেশি থাকে।
১৯৯০ সালে কমনওয়েলথ গেমসের দলগত ইভেন্টে সোনা জিতেছিলেন আতিকুর রহমান ও আব্দুস সাত্তার নিনি। অকল্যান্ড কমনওয়েল ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে সেরা হয়েছিলেন এ দুজন। এরপর ২০০২ সালে ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমসেও বাংলাদেশের হয়ে স্বর্ণ পান আসিফ গোসেন খান।
আতিকুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুটিংয়ে মূলত শারীরিক শক্তি তেমন প্রয়োজন হয় না। মানসিক শক্তিটাই মূল। তিনি বলেন, ফেডারেশন মানসিক প্রস্তুতি নেয়ার কারণেই শুটিংয়ে সাফল্য আসছে। মানসিক সমর্থনটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এটা রাতারাতি হয়না।
বাংলাদেশের শুটিং ফেডারেশন শারীরিক প্রশিক্ষক ও ইয়োগা প্রশিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। যার ফলে শুটাররা প্রস্তুতি সাড়ছেন মানসিক। আতিকুর রহমান জানান, আশি-নব্বইয়ের দশকে এই খেলায় কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি ছিল না। তারা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নিয়েছে।
খেলোয়াড় জীবনে শুটিংয়ে কেন বেছে নিলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ‘তখন জাতীয় অনেক খেলাতেই চেষ্টা করেছিলাম। একবার বন্ধুর সাথে শুটিং রেঞ্জে গিয়ে শখের বশেই দু একবার চেষ্টা করে ভাল করেছিলাম। সেবার উৎসাহ পেয়েই নিয়মিত খেলা আরম্ভ করি।’ তবে সেসময় ফেডারেশনের কোনো সহায়তা পাননি বলে জানিয়েছেন আতিকুর রহমান। তার সতীর্থ আব্দুস সাত্তার নিনির সহায়তায় কমনওয়েলথ গেমস পর্যন্ত যেতে পেরেছিলেন তিনি।
নিশানার আরেক খেলা আর্চারী।
তীর ধনূকের এই খেলায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন। দলগত ও ব্যাক্তিগত ইভেন্টে বাংলাদেশের অন্যতম সফল আর্চার রোমান সানা। যিনি ২০১৭ সালেই তাজিকিস্তানে বিশ্ব আর্চারী চ্যাম্পিয়নশিপের রিকার্ভ ইভেন্টে স্বর্ণ জেতেন। অন্য খেলার চেয়ে নিশানার খেলা কেন এগিয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা?
রোমানের মতে, ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে খেলোয়াড়ের ওপর চাপ কম থাকে। প্রত্যাশাটা থাকে নিজের প্রতি। তিনি বলেন, অন্য খেলায় দেখা যায় টিমমেট কোনো ভুল করলেই হেরে যায় দল। ব্যক্তিগত ইভেন্টে এমনটা সাধারণত হয়না।