ফিচার

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় হারিয়ে যাচ্ছেন না তো?

নরসুন্দা ডটকম   April 18, 2018
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা ঠিক নয়
অনেকেই আছেন, যাঁরা সামান্য বিষয় নিয়েই দুশ্চিন্তা করেন। যা হওয়ার নয়, সেটাও আপনি ভেবে বসে থাকলেন নিজের মধ্যে। নিজেই আপনার মন ও শরীরের ক্ষতি করছেন।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার যত কুফল : কিশোর বয়স থেকে এই সমস্যা দেখা দেয় কারও কারও মধ্যে। বয়ঃসন্ধিকালের বিভিন্ন বিষয় যেমন, পরিবেশ কিংবা পারিবারিক রীতিনীতি সবকিছু মিলিয়ে দেখা দিতে পারে। পরিবার থেকেও এটা হতে পারে। পরিবেশ কিংবা পরিবার যেভাবেই হোক না কেন, এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে নিজেকেই। কেননা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার রয়েছে নানা বিপত্তি।

১. আত্মবিশ্বাস কমিয়ে ফেলা : কথায় আছে, ‘বিশ্বাসে মেলায় বস্তু’। আর আপনি যদি শুরুতেই ধরে নেন আপনার দ্বারা হবে না, তাহলে মানসিকভাবেই এটি আপনার জন্য নেতিবাচক হয়ে দাঁড়াবে। আপনার যেই কর্মপরিকল্পনা, পুরোটাই এই একমুহূর্তেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই কী হবে কিংবা হবে না, সবকিছু ঝেড়ে ফেলে কাজটা সঠিকভাবে করুন।

২. শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা : মানসিক বিপত্তি ছাড়াও দেখা দেবে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাও। ক্ষুধামান্দ্য থেকে শুরু করে নিদ্রাহীনতা, উচ্চরক্তচাপ, মাথাব্যথা, বহুমূত্র এমনকি হৃদ্‌রোগও দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে। অনেকেরই ‘টেনশন হেডেক’ বা অতিরিক্ত মাথাব্যথা দেখা দেয়। যার ফলে আপনার ঘাড় ও চোখের ব্যথাও হতে পারে।

৩. মানসিক সমস্যা : খিটখিটে মেজাজ, হতাশা, উৎসাহ হারিয়ে ফেলা থেকে শুরু করে অল্পতেই রেগে যাওয়া, সহজেই ভুলে যাওয়া কিংবা বিভিন্ন অসামাজিক আচরণ দেখে দেবে আপনার মধ্যে। দেখা গেল আগে যেসব বিষয় সহজেই গুছিয়ে নিতে পারতেন, সেটা আর কিছুতেই হচ্ছে না। উল্টো সবার সামনে সহজেই রেগে যাচ্ছেন। এটা কিন্তু আপনার পরিবার ও কর্মক্ষেত্র দুটোর জন্যই ক্ষতিকর।

৪. সঠিকভাবে কাজ করায় বাধা : যদি শুরুতেই ধরে নেন যে কাজটি আপনার দ্বারা হবে না, কিংবা আপনি পারবেন না, তাহলে সঠিকভাবে কাজ করার উদ্দীপনাই নষ্ট হয়ে যায়। স্বাভাবিক জীবনযাপন নষ্ট হয়ে যাবে।

৫. অল্পতেই ভেঙে পড়া : বেঁচে থাকার জন্য নিত্যদিন সংগ্রাম করতে হয়। আর আপনি যদি কোনো কিছুতে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তাহলে সাহসের সঙ্গে বেঁচে থাকার প্রবণতাটাই নষ্ট হয়ে যাবে, যা আপনার ব্যক্তিত্বের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

এর থেকে পরিত্রাণের উপায় : পারিবারিকভাবে অনেকেই এই সমস্যাটি পেয়ে থাকেন। তাই নিজের সমস্যাকে চিহ্নিত করে নিন আগে। বুঝতে শিখুন, আপনার পরিবারের সদস্যটির এই আচরণ সঠিক নয়। নিজের জীবনে এই বিষয়গুলোই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। সবকিছুকে হালকাভাবে নিতে শিখুন।

কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখুন নিজের জন্য। প্রয়োজনে শখের কাজগুলো করুন। অনেক দিন ছবি আঁকেন না? এখনই আবার শুরু করুন। অবসরে প্রিয় মানুষ, পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটান। দেখবেন নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে আসছে ধীরে ধীরে।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার অন্যতম একটি সমস্যা হলো, কোনো ব্যক্তির ওপর সব রাগ বা দোষারোপ করা। এতে কিন্তু দূরত্বের সৃষ্টি হবে আপনার সঙ্গেই। তাই এই ধরনের আচরণ থেকে বেরিয়ে আসুন। অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেকেই কিছুটা সময় দিন। নিজের সমস্যা চিহ্নিত করুন, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আপনার নিজেকেই।

আবেগের নিয়ন্ত্রণ : অতিরিক্ত আবেগ ক্ষতির কারণ। আর কথায় কথায় রেগে যাওয়া আপনার ব্যক্তিত্বের জন্যই নেতিবাচক। তাই যেকোনো পরিস্থিতিতেই হোক, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রয়োজনে কিছুটা সময় নিয়ে ব্যাপারটি নিয়ে ভাবুন।

নিয়মিত শরীরচর্চা : যোগ ব্যায়াম কিংবা সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটতে বের হলে দেখবেন নিজেরই ভালো লাগছে। এ ধরনের শারীরিক পরিশ্রমের ফলে আপনার ভেতরের উদ্বেগ বেরিয়ে আসবে। এতে নিজেও অনেকটা নির্ভার বোধ করবেন।

About the author

নরসুন্দা ডটকম