নাটকীয় ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দারাবাদের কাছে ৫ রানে হেরে চলতি আইপিএল থেকে প্রায় বিদায় নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। প্রথমে ব্যাট করে হায়দারাবাদ শেষ হয়ে যায় ১৪৬ রানে। কিন্তু সেই রানও তুলতে পারেননি বিরাট কোহালিরা। হায়দরাবাদের দুরন্ত বোলিংয়ের সামনে আরসিবি করে ছ’উইকেটে ১৪১ রান।
এই ম্যাচে হারার ফলে ১০ ম্যাচে আরসিবির পয়েন্ট দাঁড়াল ৬। শেষ চারটে ম্যাচে জিতলেও কোহলিরা ১৪ পয়েন্টের বেশি তুলতে পারবেন না। ফলে সরকারি ভাবে না হলেও আরসিবির কার্যত বিদায় ঘটে গেল, বলেই দেওয়া যায়। অন্য দিকে, হায়দারাবাদ ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট তুলে প্লে-অফ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলল।
চলতি আইপিএলে অবিশ্বাস্য বল করছেন হায়দারাবাদের বোলাররা। চার বার কেন উইলিয়ামসনের দল প্রথমে ব্যাট করেছে এবং চার বারই জিতেছে। তার চেয়েও বড় কথা হল, প্রতিটা ম্যাচে কম রান তুললেও বোলাররা জিতিয়ে দিয়েছেন। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ১১৮, কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১৩২, রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ১৫১ এবং আরসিবির বিরুদ্ধে ১৪৬ তুলে জিতেছে হায়দারাবাদ। তাদের দুই স্পিনার— রশিদ খান, সাকিব-আল-হাসান এবং তিন পেসার— ভুবনেশ্বর কুমার, সিদ্ধার্থ কল এবং সন্দীপ শর্মার আক্রমণের সামনে আটকে যাচ্ছেন বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা। কোহলিরাও ব্যতিক্রম হলেন না। সাকিব নিলেন দুই উইকেট। বাকিরা একটি করে। শেষ ওভারে আরসিবির দরকার ছিল ১২ রান। কিন্তু ভুবনেশ্বরের নিখুঁত বোলিংয়ের সামনে ছ’রানের বেশি তুলতে পারেননি মনদীপ সিংহরা।
হায়দারাবাদের পিচ এমনিতে বেশ মন্থর। ব্যাটসম্যানদের রান তুলতে সমস্যা হচ্ছে। তার মধ্যে উইলিয়ামসন করলেন ৩৯ বলে ৫৬ রান। ব্যাট করতে নেমে কোহলিও ভাল শুরু করেছিলেন। কিন্তু ৩০ বলে ৩৯ করে ইউসুফ পাঠানের ধরা দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যান আরসিবি অধিনায়ক। এর পরেই রশিদের বলে বোল্ড হয়ে যান এ বি ডিভিলিয়ার্স। ম্যাচ ওখান থেকেই ঘুরে যায়।
কোহলি টস জিতে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন হায়দারাবাদকে। শুরু থেকে চাপে পড়ে যান হায়দারাবাদের ব্যাটসম্যানরাও। দুই ওপেনার আলেক্স হেলস (৫) এবং শিখর ধওয়ন (১৩) অল্প রানে আউট হয়ে যান। বরাবরের মতো হায়দারাবাদ ইনিংসকে টানেন সেই অধিনায়ক উইলিয়ামসন। শাকিব করেন ৩২ বলে ৩৫।
অস্তিত্ব রক্ষার এই ম্যাচে দলে দু’টো পরিবর্তন করেছিলেন কোহলি। ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে বসিয়ে নেওয়া হয় মইন আলিকে। দলে আসেন মনন ভোরাও। অফস্পিনার মইনকে দিয়ে বোলিং শুরু করেছিলেন কোহলি। মইন উইকেট না পেলেও তিন ওভারে ১৯ রানের বেশি দেননি। আরসিবি বোলারদের মধ্যে সেরা মহম্মদ সিরাজ। চার ওভারে ২৫ রান দিয়ে তিনি নেন তিন উইকেট। টিম সাউদিও তিন উইকেট নেন ৩০ রান দিয়ে।
হায়দারাবাদের ছেলে সিরাজ ম্যাচের আগের দিন বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সতীর্থদের। কোহলি-যুজবেন্দ্র চহালরা সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান। সিরাজ অবশ্য দলকে আরও খুশি করে দেন তাঁর পারফরম্যান্সে। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় দাম পেল না সেই পারফরম্যান্স।