ফিচার

আজ মাশরাফি বিন মর্তুজার জন্মদিন

নরসুন্দা ডটকম   অক্টোবর ৫, ২০১৮

শুভ জন্মদিন মাশরাফি বিন মর্তুজা ।

আজ ৫ অক্টোবর, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক, নড়াইল এক্সপ্রেস-খ্যাত মাশরাফি বিন মর্তুজার শুভ জন্মদিন।

এই দিনেই তিনি মায়ের কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে এসেছিলেন।

বছর গড়িয়ে বছর আসে। এভাবেই জীবন থেকে চলে গেছে ৩৫টি বছর। অধিনায়ক ৩৬ বছরে পা দিয়েছেন। মাশরাফির জন্ম ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর সবুজ শ্যামল নড়াইল শহরের মহিষখোলায়।

তার বাবার নাম গোলাম মুর্তজা স্বপন। মায়ের নাম হামিদা বেগম বলাকা।

দুই ভাইয়ের মধ্যে মাশরাফি বড়। ছোট ভাই সিজার মাহমুদও ক্রিকেট নিয়েই সময় কাটান।

মাশরাফি নামে পরিচিত নড়াইলের সেই দুরন্ত কিশোরটি ছোটবেলা থেকে কৌশিক নামেই এলাকার সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি অদ্ভুত এক ভালোবাসা কাজ করতো। এমনও অনেক দিন গেছে যে নাওয়া-খাওয়া ভুলে সারাদিন খেলার মাঠেই পড়ে ছিলেন দুরন্ত সেই কিশোর। এ জন্য অবশ্য বাবা মায়ের কাছ থেকে শাস্তিও কম পেতে হয়নি তাকে। তবে বাবা মায়ের শাসনের পাশাপাশি প্রিয় মামার সাহায্যই পেয়েছিলেন সব সময়। তাই তো ক্রিকেটটাকে এক মুহূর্তের জন্যও দূরে ঠেলে দিতে হয়নি তাকে।

৫ অক্টোবর, ১৯৮৩। ঘড়ির কাটা পেরিয়েছে সকাল ৮টা। আরো নির্দিষ্ট করে বললে হয়তো সকাল ৮টা ৩০ হবে। নড়াইলের চিত্রা পাড়ের গোলাম মুর্তজা ও হামিদা রহমানের ঘর আলো করে আসে তাদের প্রথম সন্তান। কৌশিক। এই হলো তাকে আদর করে ডাকার নাম। সময়ের সাথে মাশরাফি বিন মর্তুজা নামে ক্রিকেটবিশ্বে যার সরব উপস্থিতি। বাংলাদেশের ওয়ানডে  ক্যাপ্টেন। সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড় শুধু নয়, মানুষও। ৩৫ পেরিয়ে ৩৬ এ পা। তিন বছর আগে এই দিনই পৃথিবীতে এসেছে মাশরাফির দ্বিতীয় সন্তান, পুত্র সাহেল মর্তুজা। ক্যাপ্টেন ও তার ছেলের জন্য জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

আরো পড়তে পারেন…

নিজের বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার পেছনের কারিগর যেন এই মাশরাফি। তাই তো পেয়েছেন কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসাও। শত বছর বেঁচে থাকুক মাশরাফি। হাজারো তরুণ ক্রিকেটারের অনুপ্রেরণা হয়ে। হাজারো ক্রিকেট ভক্তের ভালোবাসা নিয়ে।

ছোটবেলা থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহী ছিলেন মাশরাফি। তাদের বাড়ির পাশেই ছিল স্কুল মাঠ। বড়রা মাঠে ক্রিকেট খেলতেন। স্কুলের মাঠে বড়দের ক্রিকেট খেলা দেখে মাশরাফির ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়।
নব্বইয়ের দশকে নড়াইলের ক্রিকেটার-সংগঠক শরীফ মোহাম্মদ হোসেন প্রতিভাবান তরুণদের নিয়ে কাজ শুরু করেন। মাত্র ১১ বছর বয়সের মাশরাফিকে এই সংগঠকই তার ক্লাব নড়াইল ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দেন।  তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ৯১’এর দিকে মাগুরায় বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ ক্যাম্পের কোচ বাপ্পির সান্নিধ্যে এসে বোলিংয়ের অনেক মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হন বাংলাদেশের অধিনায়ক। পরের বছর জাতীয় কোচ ওসমান খান নড়াইলে এক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চালাচ্ছিলেন। ওই সময় মাশরাফির আমন্ত্রণ আসে খুলনায় খেলার জন্য। খুলনায় তার গতি ও সুইং হইচই ফেলে দেয়। সেই সূত্রে খুলনা বিভাগীয় অনুর্ধ্ব-১৭ দলে সুযোগ এবং ঢাকায় আসা।
পরবর্তীতে সুযোগ পান জাতীয় অনুর্ধ্ব-১৯ দলে। সেসময়কার বোলিং কোচ অ্যান্ডি রবার্টসের পরিচর্যায় পাল্টে যান মাশরাফি। অনুর্ধ-১৯ দলে থাকতে দারুন পারফরম্যান্সের কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ-এ’ দলে খেলার সুযোগ পান। এ নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। কারণ তখনো মাশরাফি ঢাকার কোনো সিনিয়র ডিভিশন লীগেও খেলেননি।
তবে সমালোচকদের মোক্ষম জবাব নিজের পারফরমেন্সের মাধ্যমেই দিয়েছিলেন মাশরাফি। সেই সিরিজে মাশরাফি এক ম্যাচে চার উইকেট নিয়েছিলেন। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তার নাম হয়ে যায় ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। এরপর একমাত্র ইনজুরি ছাড়া কোনকিছুই মাশরাফিকে আটকাতে পারেনি।
তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় নড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে এসএসসি পাস করেন। এইচএসসি পাস করেন নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ২০০৩ সালে। এরপর দর্শন শাস্ত্রে অনার্স কোর্সে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভিক্টোরিযা কলেজে পড়ার সময় সুমনা হক সুমির সঙ্গে তার পরিচয়, এরপর ২০০৬ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। মাশরাফি ও সুমি দম্পতির ঘরে রয়েছে দুটি সন্তান-মেয়ে হুমায়রা মর্তুজা এবং ছেলে সাহেল মর্তুজা।

About the author

নরসুন্দা ডটকম