কাঁদতে কাঁদতে চোখের জলও আর আসেনা, আর কত রক্ত খাবে পিচঢালা এই পথ? আার কত প্রান ঝড়ালে জেগে উঠবে সমাজ, দেশ? আার কত মায়ের বুক খালি হলে কম্পিত হবে প্রিয় স্বদেশ? আার কত ভাইয়ের জন্য পথ চেয়ে চেয়ে চোখের পানি শুকাবে লক্ষী বোনের? তবুও ভাই তার আসবেনা ফিরে আার কোনদিন। আার কত পথ চেয়ে বাবা গ্রহন করবে তার তাজা ছেলের রক্তাক্ত লাশ ? আর কত বাবা অকালে বহন করবে পুত্রের লাশবাহী খাটিয়া । যে বাবা কাঁধে নিয়ে পুত্রকে নিয়ে খেলা করতো? আর কত দেখব পথে পথে মৃত্যু । আার কত গরীব ঘরের দরওয়াজার ধূসর চৌকাঠ সহসা রঞ্জিত হবে ছেলের ক্ষতবিক্ষত দেহ থেকে টপ টপ করে বেয়ে পড়া রক্তস্রোতে? চারিদিকে মৃত্যুর মিছিল আার কত? আর কত বুক খালি হলে পিশাচ নরপশুরা থামাবে তাদের উন্মাদ খেলা ? এমনি করে আর কত?
”যার চলে যায় সেই বুঝে হায় বিচ্ছেদে কী যন্ত্রনা” শুধুমাত্র যারা প্রিয়জন এভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে হারিয়েছেন,কেবল তারাই বুঝেন,কী যন্ত্রনা এ বিচ্ছেদে,কী যে ব্যাথা এ বিয়োগে ।
কে পারিবে সহ্য করতে তার তিল তিল করে গড়ে তোলা প্রিয় সন্তানের ক্ষত বিক্ষত লাশটা মাটিতে পড়ে আছে-এ দৃশ্য দেখে ? কে পারিবে সহ্য করতে তার প্রিয় ভাইয়ের প্রিয় মুখখানি থেতলে পড়ে আছে -এইটা দেখতে, যে মুখে পরম মমতায় হাসিমাখা স্নেহের ফুল ঝড়তো? কে পারিবে সহ্য করতে সহসা এসে যদি দেখে তার প্রিয় ভাইয়ের একটি হাত নেই? কোন বাবা মা পারবে সহ্য করতে তার প্রিয় ছেলের মাথার খুলিটা নেই ,এটা দেখতে? কোন প্রিয়জন পারবে সহ্য করতে তার প্রিয়জনের দেহ থেকে মাথা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে আাছে ,দেহাবশেষ পড়ে আাছে নিষ্ঠুর আবহেলায়।কোন সে মানব মানবী আাছে যে পারিবে সইতে তার প্রিয় সন্তানের লাশটা পড়ে আাছে গাড়ীর নীচে, আার গাড়ীর সিটে কোরবানির গরুর মগজের মতো কয়েক কেজি মগজ পড়ে আছে? একর পর এক কী যে অপূরনীয় ক্ষতির সংখ্যা গুনছে প্রিয় বাংলাদেশ,তবুও রোধ হবেনা এসব দানবের । এরা যে আনেক শক্তিশালী ! এদের নাকি সিন্ডিকেট বড়ই কড়া!
শুনতে খুব হ্নদয়বিদারক মনে হলেও এ ঘটনাগুলো বাস্তব এবং সূর্যের মতো সত্য এবং আামাদের রাস্তাঘাটের নৈমিত্তিক দৃশ্য ।এমন কোন দিনও যায়না যে এমন কোন দুর্ঘটনার খবর শুনিনা । উপরের প্রত্যেকটি ঘটনা গত কয়েক বছরে আামার চোখে দেখা । এ মৃত্যু আর কত দেখবে মানুষ? এর কি কোন প্রতিকার নেই?
ড্রাইভার শ্রেনীর এই নরপশুদের এই জীবন নিয়ে খেলা আর কত? এভাবে অকালে ঝড়ে যাবে আর কত মেধাবী ছাত্র ,বেঁচে থাকলে যারা হতে পারতো জাতির দিশারী । যাদের হতে পড়তো হয়তোবা দেশ পরিচালনার চাবি.যারা হয়তোবা এনে দিতে পারতো জাতির কাংখিত স্বপ্ন ।
অপরিপক্ক ড্রাইভার,কম বয়সী বা উঠতি বয়সী ড্রাইভার এর ছড়াছড়ি এবং এরাই বেশির ভাগ দুর্ঘটনাগুলো ঘটায়। এদের বয়সের জোশে এরা গাড়ী চালায় । জীবনকে নিয়ে এরা খেলে । আমরা যাত্রীরা তাদের বেগতিক বেপরোয়া গাড়ী চালানো দেখে অনেক সময় ভঁড়কে যাই, কখনো যদি আমরাও পেছন থেকে চিৎকার দিয়ে চালককে বলি- মামা.একটু ধীওে চালান। তখন ওরা আমাদের নিয়ে হাসে, টিটকিরি করে বলে, ‘ভয় পায়, গ্রাম থেকে আাসছে মনে হয়।’ এমন অশুভ পরিস্থিতিতেও পড়েছি । আমরা আসলে ড্রাইভারদের কাছে জিম্মি । জীবনটা তাদের হতে সোপর্দ করে দিয়ে গাড়ীতে উঠতে হয় । আর গাড়ীতে উঠার পর তখন আসলে কিছু করারও থাকেনা যাত্রীদের যাত্রীরা তখন সত্যি খুব অসহায় । গাড়ীটা উল্টে যাচ্ছে-টের পেলেও, দেখতে পেলেও তখন চিৎকার করে মহান আল্লাহর নাম ডাকা ছাড়া যাত্রীর আর কিছুই করার থাকেনা । কিন্তু এতগুলো জীবনের কথা ও সেইফ জার্নির কথা যদি একটুখানিও ভাবেন তবে একজন ড্রাইভার এর অনেক কিছুই করার থাকে যা তারা একটুও করেন না ।
যেমন :-
গাড়ী চালানোর পূর্বে গাড়ীর ফিটনেস চেক করা যাতে অনিয়ন্ত্রত ব্রেকফেইল না হয় ।
অহেতুক ওভারটেকিং না করা।
পাল্লা দিয়ে গাড়ী না চালানো ।
রং সাইড দিয়ে গাড়ী না চালানো।
দুই গাড়ীর মাঝখান দিয়ে ওভারটেকিং না করা।
বোঝাই করে যাত্রী না তোলা ।
গতিসীমার অতিরিক্ত গতিবেগে গাড়ী না চালানো।
ড্রাইভার এর পরিবর্তে হেল্পার দিয়ে গাড়ী না চালানো।
আগের রাত সারা রাত নাইট শিফ্টে গাড়ী চালিয়ে প্রয়োজনমত না ঘুমিয়ে টাকার লোভে আবার গাড়ী চালানো অর্থাৎ চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ী চালানো ।
নেশা করে গাড়ী না চালানো।
তেমনি এক নরপিশাচ বাসড্রাইভারের রেইস দিয়ে ফাওল ওভারটেকিং করতে যাওয়ায় অকালেই জীবনের স্বপ্ন চুর্ণীভুত হয়ে গেল । হারিয়ে গেল সরকারী তিতুমীর কলেজের মেধাবী ছাত্র চির অনাথ রাজীবের একটি হাত চিরতরে । রাজীবের ডান হাতটি ছিড়ে নিয়ে গেল ঘাতক স্বজন বাসটি। অথচ এমন নিষ্ঠুর অথচ অপ্রয়োজনীয় ওভারটেকি এর কোন দরকারই ছিলনা । শুধুই একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা ছাড়া কিছুইনা । এভাবে ঝড়ে যাচ্ছে প্রতিদিন কত তাজা প্রান, অথচ ড্রাইভারদের চরিত্রের কোন পরিবর্তন নেই ।
জীবন নাশের অবিনাশী খেলায় মেতে উঠেছে ওরা, ওদের কে রুখবে? কার আছে এত সাহস? এদের নেপথ্য শক্তি নাকি আনেক মজবুত । সাতশো হাত মাটির নীচেও নাকি তাদের লোক আছে । আর থাকবেই না কেন? প্রচলিত আইনে খুনের বিচারে ফাঁসির রায় হয় ।কিন্তু এমন মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার কি বিচার হয় ? আর বিচার করতে গেলে বিপাকে পড়ে সরকার । সমস্ত পরিবহন সেক্টরের লোক সব একজোট হয়ে ডাক তুলে পরিবহন ধর্মঘটের । সারা দেশ অচল করে দিবে । লাগাতার দুই তিন দিন দেশের কোথাও কোন গাড়ী চলবেনা । দেশের সব মানুষকে ঘরকোণে করে ফেলবে। স্কুল,কলেজ,অফিস,আাদালত,ব্যবসা,বানিজ্য ,চিকিৎসা-সব বন্ধ ।
কিছুদিন পূর্বে বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীর হত্যার রায় ঘোষণার পর সারাদেশে কিভাবে পরিবহন ধর্মঘট হয়েছিল,তা সবারই জানা । সামান্য কটা টাকা ক্ষতিপূরন কিংবা জরিমানা দিয়ে মিটমাট করা হয় একাধিক হত্যার বিচার। একটা দুটো নয় ,যদি কয়েকটা লাশও রাস্তায় পড়ে থাকে,তবুও মাত্র কয়েক হাজার টাকা দিয়েই বিচার আচার শেষ করে ফেলা যায়, যেখানে জলন্ত প্রমানযুক্ত রোড এক্সিডেন্ট এর পরও বিচারিক কিংবা সালিশি প্রক্রিয়া এত সহজ ও শিথিল,সেখানে একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি পূন:পূন বার ঘটবেনা?
গত বুধবার অজ্ঞাতপরিচয়ের এক যুবক গাড়ীর ধাক্কায় প্রান হারিয়েছেন রাজধানীর পল্টন থানার পোস্ট অফিসের পাশের রাস্তা পার হওয়ার সময় । ঠিক একদিন পরই বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটার দিকে এই ঘটনা ঘটিল । আনুমানিক বয়স পচিশ হতে পারে নিহত ওই যুবকের । পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়-মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহোদয়ের গাড়ীবহর যাওয়ার পরপরই রাস্তা পার হওয়ার সময় ওই যুবক কে একটি বেপরোয়া গাড়ী ধাক্কা দেয় । এতে তিনি গুরুতর আহত হন । পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলিয়া ঘোষনা করেন । এক মিনিট আগেও যে ছেলে ছিল রাস্তা পার হবার অপেক্ষায়, কে জানতো সেই অপেক্ষা যে তার জীবনের শেষ অপেক্ষা হবে । মুহুর্তের ঝড়ে ভুপাতিত হলো একটি জীবন এবং চিরতরে শেষ হয়ে গেল সেই তাজা প্রাণ,আর কোনদিন ফিরে আসবেনা । এভাবেই অকালেই ঝড়ে যাচ্ছে প্রাণগুলি ।
এবার আসি ”রাজীব ট্র্যাজেডী” তে । ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার । রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত সরকারী তিতুমীর কলেজেরে স্নাতক (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন যার বয়স আনুমানিক একুশ । বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন রাজীব । এ সময় সামান্য বাইরে বেরিয়ে ছিল তার হাতটি । হঠাৎ একটি স্বজন পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস বিআরটিসি বাসটিকে খুব বেপরোয়াভাবে পেছন থেকে ক্রস করার সময় পেরিয়ে যাওয়া বা ওভারটেক করার জন্য বা দিকে গা ঘেসে পড়ে । দুই বাসের প্রবল চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে । অজ্ঞান হয়ে পড়ে রাজীব ।পরে পথচারীরা তাকে শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করে । সেখানে রাজীবের চিকিৎসা ব্যয়ের বিল একদিনেই দাড়িয়েছিল ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা । স্বজনেরা সব টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। সবাই মিলে মাত্র ৩৫,০০০ টাকা দিতে পেরেছেন। ব্যয়বহুল বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সম্ভবপর নয় বলে গতকাল বুধবার বিকেেেল রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় । হাসপাতালের শয্যায় অনিশ্চিত ভষ্যিতের অন্ধকার অমানিশার অতল গহ্বরে ভুপাতিত হওয়ার নিশ্চিত যাত্রার পথ চেয়ে দিন কাটছে মেধাবী ছাত্র রাজীবের আর তীব্র ব্যথার গোঙ্গানীতে ভারী হয়ে আাসছে হাসপাতালের ফ্লোর ।
রাজীব হোসেন তার মাকে হারিয়েছিলেন সে যখন তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র, মা হারানোর শোক সইতে না সইতেই তার জীবনে নেমে আসলো আরেক অন্ধকার ।পৃথিবীর সব আশ্রয় তার জীবন থেকে হারিয়ে গেল । মাথার উপর থেকে আকাশটা সড়ে গেল । দু:খ বলার মানুষটাও হারিয়ে গেল তার । অষ্টম শ্রেনীতে উঠতে না উঠতেই মা হারা এতিম রাজীবের মাথার উপরের শেষ আশ্রয়স্থল জন্মদাতা বাবাও চলে যান না ফেরার দেশে । রাজীবের বড় খালা জাহানারা বেগম তাকে অন্ধের যষ্ঠি, যক্ষের ধন,বুকের মানিকের মতো আগলে রাখেন । রাজীবও দৃঢ় পদব্রজে এগিয়ে যাচ্ছিলেন জীবন সংগ্রামের কঠিন সব বাধা পেরিয়ে কষ্টেসৃষ্টে । রাজীবের ভবিষ্যত এখন ভীষন শংকায় । চিন্তায় কাতর তার স্বজনেরা । একটি হাত হারানোর সাথে সাথে সব স্বপ্নগুলি চুর্ন হয়ে গেল। নিষ্ঠুর বাসের বেপরোয়া গতির মুখে পড়ে ডান হাত হারানো এতিম এই ছেলেটিকে এখন কে জীবনভর দেখবে,তা ভেবেই যেন দিশেহারা তারা ।
রাজীব বাবার বড় ছেলে । তিন ভাইয়ের মধ্যে রাজীবই সবার বড় । বাবার বড় ছেলে হওয়া যে কত যে টেনশন ও দায়িত্বপুর্ন কাজ,সেটা যারা হয়নি,তারা কখনোই বুঝবেনা । পুরান ঢাকার মীরহাজিরবাগে একটি মেসে থেকে পড়াশুনা করেন । রাজীব পড়াশোনা করতেন বড় কষ্টে। অভাব ছিল তার নিত্য সংগী । কখনো টিউশানি করে, কখনো কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে,কখনো প্রকাশকের স্ক্রীপ্ট লিখে পড়ালেখার খরচ যোগাতেন । এই ডান হাতটাই ছিল তার রুটি রোজগারের একমাত্র উপায় ও পথ । কখনো কখনো তার মামা খালারাও এগিয়ে আসতেন সুযোগ সুবিধামত । রাজীবের ছোট দুইভাই যাত্রাবাড়ির একটি মাদ্রাসার এতিমখানায় থেকে পড়াশোনা করছে।
রাজীব স্বপ্নে বিভোর ছিলেন ভাল একটা চাকরি করবে বলে । সারাটি জীবন কষ্ট করে চলা চির এতিম রাজীব পড়াশোনা শেষ হলে চাকরি শুরুর গল্প চাকরি শুরুর গল্প শুরু করেছিলেন কিছুদিন যাবৎ । ছোট ভাইগুলোর একমাত্র অভিভাবক ,তাদের স্বপ্নের আধার জীবনযোদ্ধা রাজীব আজ সবার চোখের পানি। হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন রাজীব । তীব্র যন্ত্রনায় ছটফট করছেন ।জীবনে তার নেমে এল অনিমেষ যন্ত্রনা । রাজীবের খালা জাহানারা বেগম বলছিলেন , ছেলেটা কখনো কোন কিছুর জন্য আবদার করেনি । যা দিয়েছি তাই খেয়েছে,তাই পড়েছে।
এই দুর্ঘটনায় চোখের পানি থামছেইনা তার। এ যেন তার কান্না নয় । এ যেন ষোল কোটি বাঙ্গালির কান্না । এ যেন সব মানুষের কান্না । এ কান্না থামিবার নয় । রাজীবের জন্মদাত্রী মায়ের কবরের কান্না । দেশের সব রাজীবদের মায়েদের কান্না ।
হাসপাতালের বিছানায় তীব্র যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন এখন রাজীব । আপনি, আমি যতই সহানুভুতি দেখাই, যে কষ্ট সে আজ পাচ্ছে এটা বুঝা কারো পক্ষে সম্ভব নয় । তার কষ্ট আমরা কেউই বুঝবনা । সারা জীবনের কর্ম করে খাওয়ার শক্তি টা উড়ে গেল । যে হাতে রাজীব লিখতে পারতো উন্নয়নের নতুন ম্যাগনাকার্টা, যে হাতে মমতায় পরশ বুলাতো আগামী দিনের ভবিষ্যতব্য শিশুকে, যে হাত মায়ের কবরে ফুল দিত, যে হাত বাবার কবরের পাশের ডালিম গাছটায় পানি ঢালতো, যে হাত হতে পারতো অনুমোদনের কোটি কোটিমূল্যবান স্বাক্ষরের স্মারক, যে হাত হতে পারতো রাষ্ট্রীয় কারেন্সীর কাগুজে মুদ্রার অমূল্য স্বাক্ষর দাতা, যে হাত তর্জনী তুলে দেশের শত্রুদের হুশিয়ার করতে পারতো, সে হাতটিই আাজ এপিটাফের নীচে চাপা পড়ে গেল । রাজীব-এ জাতি তোমার কাছে বড়ই লজ্জিত ।আমরা পারিনি তোমাকে সে দেশ দিতে যে দেশের মানুষ নিশ্চিন্তে, নিরাপদে ঘরে ফিরবে ।