যেসব প্রাণীকে সাধারণত মানুষ ক্যারিশমাটিক বা জনপ্রিয় বলে ধরে নেয়া হয়, যেমন ধরুন তেজস্বী, ক্ষিপ্র কিংবা অসাধারণ সুন্দর বলে যাদের খ্যাতি আছে, নতুন এক গবেষণা বলছে তারা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এই বেশি জনপ্রিয় প্রাণীদের দেখা যায় বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন পণ্যের ব্রান্ডিং ও বিজ্ঞাপনে অহরহই প্রতিনিধিত্ব করছে। গবেষকেরা দেখেছেন, এ প্রাণীরা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে এমন কোন আশংকায় ভোগেনা সাধারণ মানুষ।
ফলে তাদের সংরক্ষণে সচেতন হয়না। সেই সঙ্গে সত্যিকারের বাঘ-সিংহের বদলে রোজ গণমাধ্যমে যে ‘ভার্চুয়াল’ বাঘ-সিংহ দেখে মানুষ, তাতে জঙ্গলে এসব প্রাণী বিপুল সংখ্যায় আছে বলেও মানুষ মনে করে।
ফলে গবেষকেরাই প্রশ্ন তুলছেন, জনপ্রিয়তাই কি কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে এসব প্রাণী সংরক্ষণের জন্য! ইংরেজি, স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ এবং জার্মান এই চারটি ভাষায় চালানো একটি অনলাইন জরিপে মানুষকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাদের চোখে সবচেয়ে ‘ক্যারিশমাটিক’ প্রাণী কোনটি।
তাদের সবচেয়ে বড় অংশটি উত্তর দিয়েছেন বাঘ। এর পরেই রয়েছে সিংহ, হাতি, জিরাফ আর চিতার নাম। এরপর পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএনের শীঘ্রই বিপন্ন হতে যাওয়া প্রাণীদের তালিকা মিলিয়ে দেখেন গবেষকেরা।
তাতে দেখা যায়, জরিপে শীর্ষে থাকা দশটি প্রাণীর মধ্যে নয়টিই সংকটাপন্ন, বা বিপন্ন অথবা অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। জরিপে যখন এসব প্রাণী সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, সেগুলোর অবস্থা খারাপ বলে মনে করে কিনা মানুষ। উত্তর ছিল, না।
বিলুপ্ত প্রায় গরিলা এই তালিকায় আছে তা ভাবতেও পারেননি অধিকাংশ উত্তরদাতা।
চিতা বাঘের প্রজনন ক্ষমতা গত কয়েক দশকে ৭০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে নিজেদের আদিবাসে তাদের যেসব বংশধরেরা রয়েছেন, মোট সংখ্যার ১০ শতাংশও নয় তারা। গবেষক দলের নেতা সারাহ ডুরান্ট বলছেন, প্রাণীদের রক্ষায় এখুনি নতুন ধরণের কোন টেকসই পরিকল্পনা করতে হবে।
সেই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্যের ব্রান্ডিং এবং বিজ্ঞাপনে এসব প্রাণী ব্যবহার করবেন, প্রাণী সংরক্ষণে তাদের সবার অর্থ সাহায্য প্রদান করা উচিত।