নদী, পরিবেশ ও সমাজ নিয়ে গভীর ভাবনা তার। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় লক ডাউনের আগে সচেতনতা অভিযানে নেমেছেন তিনি। লকডাউনের পর খুলেছেন করোনা হেল্পলাইন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। বর্তমানএ সমগ্র বিশ্বের কি পরিস্থিতি? স্থানীয় পরিস্থিতিই বা কি? এই সব নিয়ে নরসুন্দা ডট কমের জন্য পশ্চিমবঙ্গ (ভারত) থেকে লিখছেন- লেখক, সাংবাদিক, তুহিন শুভ্র মন্ডল। চোখ রাখুন www.narashunda.com নরসুন্দা ডট কম এ। আজ পড়ুন দ্বিতীয় পর্ব।
এই যে এত ভয়াল তার রুপ, এত আতঙ্ক, মৃত্যুর মিছিল, সমগ্র পৃথিবীর সঙ্কট ঘনীভূত হয়েছে এক জায়গায় এসে। তবুও কি আমরা সিরিয়াস? এই মারণ করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায়?
আমরা কি সিরিয়াস?
গত পরশু আমেরিকা থেকে আমার এক বন্ধু ফোন করেছিল।ওর বাড়ি বালুরঘাটে।বালুরঘাটের নাম তো নিশ্চয়ই শুনেছেন আপনারা।ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর তার সদর শহর।দেশভাগের আগে অবিভক্ত দিনাজপুরের অংশ ছিল।সেই বালুরঘাটে ওই বন্ধুর বাড়ি।অর্থাৎ আমার শহরে।কর্মসূত্রে এখন থাকে বেঙ্গালুরু আর আমেরিকায়।সে বললো আমেরিকা এখন সিরিয়াস।যদিও লকডাউন করতে দেরি করেছে।তাই বিপদে পড়েছে।ইতালিও তো তাই।প্রথমে অবহেলা করেছে।তারপর আর সামলাতেই পারেনি।
ওর কথা অনুযায়ী আমেরিকাতে মোট চারটি জায়গায় অর্থাৎ নিউ জার্সি, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস আর সবচেয়ে বেশি নিউ ইয়র্কে।আমেরিকা যেটা এখন করছে তা হল বাইরে থেকে যারাই আসছে তাদেরই এয়ারপোর্টের পাশে বা ট্রেনের স্টেশনের পাশেই কোয়ারান্টাইনে বা আইসোলেশনের ব্যবস্থাপনা করেছে।সেই পর্ব মিটলে পরীক্ষা করে তারপর কাউন্টি, শহরে বা বাড়ি যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছে তারা।তা ছাড়া যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেনা।
এমন পরিকাঠামো কি আছে ভারতবর্ষে?
সহজ উত্তর হল নেই। প্রশ্ন হল সেই পরিকাঠামো গড়ার ভাবনা আছে? সেটাও বড় প্রশ্নচিহ্নের সামনে। প্রশ্ন উঠেছে সময় না দিয়েই কেন লকডাউন করা হল। বাড়িতে ফিরবে না যারা দূরে আছে? এর ফলে মর্মান্তিক দৃশ্য দেখলো সমগ্র বিশ্ব। পায়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছে মানুষ।ছোট ছোট বাচ্চা। মাথায় বোচকা নিয়ে পথ হাঁটছে কচি পা। মৃত্যুমিছিল শুরু হয়েছে যেন! বেসরকারী সূত্র জানাচ্ছে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে মৃত্যুর সংখ্যা নাকি 22।22? একটা ছবি গেল দিল্লিতে। আনন্দবিহার বাসস্ট্যান্ডে। কাতারে কাতারে মানুষ।কি করে হবে সোস্যাল ডিসস্ট্যান্সিং? হু তো ফিজিক্যাল ডিস্ট্যান্সিং- এর কথাও বলছে। তাহলে?
মানুষও কি মানছে, শুনছে?
আবার সরকার ও প্রশাসনের যাবতীয় যা নির্দেশিকা, করোনা মোকাবিলায় জনগণের কাছে আবেদন সেটাও কি মানছে জনগণ? পরিষ্কার উত্তর হচ্ছে মানছে না। তাই রাস্তায় প্রায়শই বেড়িয়ে যাচ্ছে মানুষ। বাজার ঘাটে, চায়ের দোকানে, মোড়ের মাথায় মানুষের জটলা। পুলিশি টহলের পরপরই রাস্তায় ভিড় করছে উৎসুক মানুষ। কিছুতেই তারা বুঝতে পারছে না বা বুঝতে চাইছে না এই ভয়ংকর মারণ করোনা ভাইরাসের ক্ষমতা। ভাবতে হচ্ছে সেনা নামানোর কথা। ভারতবর্ষের একটি অতি শহর বালুরঘাটেও নেটিজেনরা এই আবেদন রাখছেন। তাহলে কি যথার্থ শিক্ষার অভাব নয়? কি বলেন আপনারা?