“কফিনে মোড়ানো ভালবাসা”
—————————— ———–
ফিরে এল অামার কফিনো মোড়ানো
ভালবাসা,
ফিরে এল অামার কফিনে মোড়ানো
পোড়া শবদেহগুলি।
ফিরে এসেছে দীর্ঘশ্বাসের গুমোট হাহাকার
এয়ারপোর্টের জমিনে নেমেছে হ্নদয় ছেড়া গোঙ্গানি।
হায়রে ভাগ্যের পরম খেলা!
ফিরে এসেছে অামার জীবিত ভাইয়ের মৃত লাশগুলি,
ফিরে এসেছে দুরন্ত ছুটে চলা ভাইয়ের নিস্প্রান দেহগুলি।
ফিরে এসেছে বাক্সবন্দী ভগ্নদৈহিক,বিবর্ন,চুরমার স্মৃতিগুলো।
কফিনো মোড়ানো অামাদের ভালবাসাগুলি।
ফিরে এসেছে কতগুলো লাশ অার লাশের সারিবদ্ধ কফিন।
নিয়তির কী নিষ্ঠুর পরিহাস!
নিয়তির কি বিনাশী খেলা!
টগবগে যুবক,এক বুক স্বপ্ন,
একমুঠো হাসির মিশ্র সমাহার,
সবই অাজ বিলীন,কাষ্ঠের কফিনে পেরেক মারা।
মহাকাশের অতল গহবরে হারিয়ে গেছে
সেই প্রিয়মুখগুলো- অামার, তোমার,সবার।
একসাথে হারিয়েছে অসংখ্য স্বপ্নের পাহাড়,
ধ্বসে গেছে উদীয়মান স্বপ্নের মাস্তুলখানা।
সমাধির প্রান্তে এসে গেছে
জীবন্ত প্রানগুলি।
সমাধিতে এসে বিলীন হলো
মুঠো মুঠো স্বপ্নগুলি।
এপিটাফ তাদের কী হবে জানিনা,
পৃথিবীরূপ চিরকাল কান্নার স্বারক হবে
সমাধিতে খোদাই করা অক্ষরগুলি।
জমাটবাধা কান্না অাজ জমেছে বুকে,
একটা একটা স্বপ্নের হলো কুপোকাত।
রানওয়ের কালো পিচের উপর পড়ে থাকা পোড়া দেহগুলি অাজ
বীরের বেশে স্বদেশে এসেছে,তবে লাশ হয়ে,কফিনে মোড়ানো পরাস্ত অস্তিত্ব হয়ে।
শুধু কফিনের দরজা খুলে পা রাখতে পারেনি বাংলার মাটিতে।
চিরকালের অবরোধবাসি হয়ে গেল,
হয়ে গেল মহাকালের অতিথি,
মাহাকাশের অনন্ত যাত্রায় অার ফিরে এলোনা।
অামরা তোমাদের বাঁচাতে পারিনি!
ষোল কোটি বাঙ্গালীর অাহাজারি অাজ গগন বিদীর্ণ করছে।
সারাদেশজুড়ে শোকের মাতম অার কান্নার রোল।
ফুঁসে উঠেছে জনতা।
কিন্তু নির্বিকার!
নেপাল তোমাদের বাঁচাতে পারেনি।
কাঠমন্ডু তোমাদের মাটির শক্তিতে ফেরাতে পারেনি সেই উর্ধ্বাকাশে চলে যাওয়া।
অার ফিরে পাবনা তোমাদের জীবন্ত সে হাসিগুলো,
রজনীগন্ধা, লালগোলাপে সাজোয়া কফিনের লাশগুলো অাজ পিচঢালা পথের বোবা কান্নার জনক।
ঢাকা এয়ারপোর্ট শোকে স্তব্ধ।
অার্মি স্টেডিয়ামের হ্নদয় গলে খসে পড়ছে
হাহাকারের অশ্রুপাত।
সেইতো এসেছো,
নির্বাক মৃতদেহ হয়ে,
এলে চিরকালের শোঁকগাথা হয়ে।
ওপারে ভাল থেকো তোমরা।