যে দুইজনকে ঈর্ষা করতাম, তাঁরা চলে গেছেন এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে। সৈয়দ শামসুল হক এবং আল মাহমুদ। ঈর্ষা করতাম এই কারণে যে তাঁরা জীবিত অবস্থাতেই বাংলাসাহিত্যে অমরত্বের সুসংবাদ পেয়ে গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে কোনো ক্ষেত্রে কাজ করা অন্য কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিত্বের প্রতি বিন্দুমাত্র ঈর্ষা নেই আমার। কোনো মন্ত্রী, এমপি, আমলা, সামরিক কর্মকর্তা, বিশাল ধনী, ফিল্মস্টার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, প্রচণ্ড ক্ষমতাবান ব্যক্তি, গায়ক, অসংখ্য পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তি, সুন্দরীবেষ্টিত সেলিব্রেটি, জীবিত কোনো লেখক বা কবি, জনপ্রিয়তায় আকাশছোঁয়া লেখক– কাউকেই আমি ঈর্ষা করি না। ঈর্ষা করার কোনো কারণ আছে বলে মনেও করি না। আমার আকাঙ্ক্ষার তুলনায় তারা অনেক অনেক ছোট।
বাংলাদেশটাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি আমি। সেই স্কুলজীবন থেকেই। পর্যবেক্ষণ করেছি ঘটনাবলি, ব্যক্তির উত্থান-পতন, গোষ্ঠীর আস্ফালন। তারপর তাদের মিলিয়ে যেতেও দেখেছি কোনো বুদ্বুদ না তুলেই।
কেউ কেউ আমাকে দেমাগি ভাবতে পারেন। অযৌক্তিক অহংকারী ভাবতে পারেন। মূর্খ ভাবতে পারেন। তাতে অসুবিধা নেই।
শুধু বলতে চাই, আমি নিজেকে বড় বলে কোনো ঘোষণা দিচ্ছি না। বলছি– আমার আকাঙ্ক্ষা এইসব ক্ষুদ্র-মহান ও বামনদেরকে দেখতে পায় না।
জাকির তালুকদার : কথাসাহিত্যিক। নোট: লেখকের ফেসবুক আইডি থেকে নেয়া।