কবিতা সাহিত্য

সাইফুল ইসলাম মাসুম এর দুটি কবিতা

নরসুন্দা ডটকম   নভেম্বর ৭, ২০১৭

———————————–

স্বপ্নীল ভূবন

———————————–

মুক্তঝড়া স্বপ্ন অামার
স্বপ্নীল অামার ভূবন,
স্বপ্নের সাথে খেলা করি
স্বপ্নই অামার জীবন।

স্বপ্নের মাঝে স্বপ্ন দেখি
স্বপ্নই অামায় ভূলায়,
স্বপ্ন দেখি অাসছি ফিরে
হ্নদমাঝারের কুলায়।

অামায় ডেকে পাবে নাকো
স্বপ্নে বিভোর অামি,
স্বপ্নে হাসি,স্বপ্নে কাঁদি
স্বপ্ন যে অামার দামী।

ভেঙ্গে নাকো স্বপ্ন অামার
স্বপ্নে তাকে দেখি,
স্বপ্নের মাঝে অাসে যে রোজ
অামার পরান পাখি।

নিঃশ্বাসে অামার, বিশ্বাসে অামার
নিত্য তাহার বাস,
কল্পনাতে তাকে খুঁজি
বছর দিন মাস।

দিবা নিশি খুঁজে ফিরি
তাহার স্নিগ্ধ ভালবাসা,
ক্ষীন অাধারে খুঁজে ফিরি তার
অালো হয়ে অাসা।

স্বপ্নময় ধরা অামার
কাব্যময় অামার জীবন,
কাব্যের মাঝে দিনরাত বাঁচি
কাব্যই অামার ভূবন।

ভূবন মাঝে প্লাবন এসেছে
ভাসি অাশার জোয়ারে,
স্বপ্ন অাশা বাঁচায় মোরে
ফিরায় সুখের দুয়ারে।

দুয়ারে তাহার পদচিহ্নটা
জাগায় সুখের পবন,
সেই পবনে নাও ভাসিয়ে
গড়ছি সুখের জীবন।

জীবন অামার ধন্য করেছ
দিয়েছ তোমার পরশ,
স্বপ্নেতে বাঁচি, এখানে রচি
সুখের নূতন হরষ।

হরষে তাই,বিষাদেও তাই
রচিব নতুন কাব্য,
পিচঢালা এই পথটা যেন
ফুলেল হয় দিব্য।

তুমি এসো মোর স্বপ্নের মাঝে
এসো দিন রাত্রি,
তোমায় নিয়ে হব অামি
সুখ সাগরের যাত্রী।

কল্পনার মাঝে এসো গো তুমি
এসো নিশিদিব্য,
ফিসফিসি করে বলা কথাগুলো
হবে নিশিকাব্য।

দিব্যলোকের কল্পনায় তুমি
তুমি ভাবনার রাণী,
স্বপ্নময় পৃথিবী গড়েছ অামার
সম্রাজ্ঞী তোমায় মানি।

জানি তুমি জ্বেলেছ অনেক
দীপ্যমান অনির্বাণ,
নিয়ত তাই জ্বলছি অামিও
হয়েছি মহীয়ান।

তোমার অালোয় অালোকিত হয়ে
হেটেছি অনেক পথ,
ছেড়েছি ভ্রান্তি, ছেড়েছি হেয়াল
ছেড়েছি উল্টো রথ।

অালোকবর্তিকা জ্বেলেছ তুমি
মুছেছ দুঃখের ক্ষত,
ক্লান্ত হওনি, ক্ষান্ত হওনি
হাল ধরেছ কত!

অাজো অামি স্ব-মহিমায়
চলছি দৃঢ় পায়ে,
তোমার শক্তিতে বলীয়ান হয়ে
নড়ছি যোদ্ধা হয়ে।

সাইফুল ইসলাম মাসুম এর কবিতা


————————-
 উল্টো পথ
————————–

পৃথিবীর নিয়ম উল্টো হয়ে গেছে
পাল্টে গেছে সবার গতিপথ,
সোজা পথে প্রাপ্তি যে মিছে
উল্টো পথেই মেলে অভিমত।।

সবখানেতেই যুদ্ধ অার যুদ্ধ
যুদ্ধের নেশায় বাকরুদ্ধ
যুদ্ধের তরেই ব্যস্ত সবাই
মাতাল গোষ্ঠীশুদ্ধ।

একটা যেন মাতাল জগৎ
পাতাল যাহার নেই,
পাতালবিহীন মাতাল ভূবন
মাতাল অামি সেই।

করি হইচই করি কোলাহল
করিনা সত্যের স্তুতি
হ্নদয়মাঝে হয় দোলাচল
হয়না অনুভূতি।

নষ্ট মন, নষ্ট মানুষ, নষ্ট এই জগৎ
হারিয়েছে সব সৎ অভিমত।
নষ্ট ভূবন হারিয়েছে অাজ
স্পষ্ট পৃথিবীটা,
ঝাপসে থাকা দুইটা চোখ
হারায় অালোকচ্ছটা।

অভিযোজন অার সংস্রবনের
অশুভ সব শংকা
অার অশুভ হাতছানি,
বাজছে বীনা,বাজছে ভয়াল ডংকা
বাজছেনা ভ্রাতৃত্বের হ্নদ্য জয়ধ্বনি।

উল্টোপথে চলছে পৃথিবী
উল্টো রথে ভূবন,
উল্টো টানেই নামতে গিয়ে
ছিড়ছে সুখের বাঁধন।

মানুষ নামের দু পেয়োটা
হয়েছে অাজ পশু
পশুর চেয়েও খারাপ যদি
থেকে থাকে কিছু।

পশুর মত পাশবিকতা
মানুষ যদি দেখায়
মানুষেতে নেই মমতা
মানুষ যাবে কোথায়?

মমতাহীন, মানবিকতাহীন
অামরা এ কেমন মানুষ,
ভালবাসতে পারিনা তবুও
শোধাই মিথ্যের জোকস।

জোকস অার মিথ্যায় ভরা
জীবন যদি তব
মূল্যহীন এ জীবন অামার
ঘৃনিতই অামি হব।

অামি মানুষ অামার মাঝে
থাকবে কেন ভেদাভেদ,
পশুত্বকে রুখিয়া দাঁড়াই
রুখি হিংসার বিভেদ।

হীন অামি তুচ্ছ অামি
ভাবটা অামার অাজব
অথচ অামি কেবলই শুনাই
অামি মহামানব।

মূল্যবোধ হারিয়েছি সব
হয়েছি মস্ত দানব,
মানুষের মাঝে থাকিয়াও ভাই
হয়েছি তুচ্ছ মানব।

দানবেরও ভাই দয়া মায়া অাছে
নেই অামি মানুষের
উল্টো পথ চলিয়া মানব
হারিয়েছে গুন মানবের।

এ ধরা যে শুধু গুনগান গায়
উল্টো পথের পথিকের
উল্টো রথই টিকিয়া রহিয়াছে
সত্য পথ যে ক্ষনিকের।

কি দিন ছিল,
ঘোড়ার পিঠে চড়তো মানুষ,
অার এখন মানুষের পিঠে ঘোড়া,
ওস্তাদ অার শিস্যকে মারেনা
শিস্যই দেয় যে তাড়া।

গুরুশিস্যে নেই যে সম্মান
শিস্যের বিশাল দম্ভ
গুরুই এখন স্তুতি করে
শিস্যের ক্ষমতার স্তম্ভ।

সন্তান যখন সেবিত বাবাকে
বাবা হত অশ্রুসিক্ত,
বাবাই এখন সেবিছে পুত্রে
তিনিই এখন রিক্ত।

উল্টো পথে চলছে দুনিয়া
উল্টো পথে অামিও,
উল্টোরথেই হারিয়েছি সব
হারিয়েছিও ভূবনস্বামীও।

অামিও এক ভিখারী ভাই
অামার নেই কিছু
উল্টো পথে হাটতে গিয়ে
নিয়েছি তোমার পিছু।

হে বিধাতা করিও ক্ষমা
কর হে অামায় দয়া
সরল পথে চলিতে চাই
ছাড়িয়া সে পথের মায়া।

About the author

নরসুন্দা ডটকম