দেশ-বিদেশ

চীনে কর্মী ছাড়াই দোকান, অ্যাপের মাধ্যমে দাম মেটান

নরসুন্দা ডটকম   এপ্রিল ১২, ২০১৮
চীনে কর্মী ছাড়াই দোকান

অনলাইন শপিং আজ আর নতুন বিষয় নয়৷ কিন্তু সম্পূর্ণ কর্মীহীন সুপারমার্কেটে বাজার করার অভিজ্ঞতা ক’জনের হয়েছে?সম্প্রতি চীনে এমন স্বয়ংক্রিয়, আধুনিক দোকানের প্রসার বাড়ছে৷ অ্যাপের মাধ্যমেই ক্রেতা সব কাজ সারছেন৷

বেইজিং শহরের উপকণ্ঠে কেনাকাটার অভিনব ব্যবস্থা৷ সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়, কোনো কর্মী নেই৷ ভবিষ্যতের সুপারমার্কেট নাকি এমনই দেখতে হবে৷ অ্যাপের মাধ্যমে ক্রেতা দোকান খুঁজে নেবেন, পণ্য বেছে নেবেন এবং দামও মেটাবেন৷ সুপারমার্কেটের কাস্টমার ম্যানেজার লিউ জিইয়ে বলেন,‘‘পাঁচটি ক্যামেরা সর্বক্ষণ দোকানের উপর নজর রেখে চলেছে৷ তাই ক্রেতা কোনো পণ্য লুকিয়ে ফেললে অথবা দাম না মিটিয়ে বেরিয়ে গেলে সার্ভিস সেন্টার তাঁকে সে কথা মনে করিয়ে দেবে৷”

যে কোনো ছোট দোকানের মতো এখানেও স্ন্যাক্স, পানীয়, তেল, সাবান ইত্যাদি পাওয়া যায়৷ আশেপাশের অফিসের কর্মীরা লাঞ্চ ব্রেকে বাজার করতে আসেন৷ প্রত্যেকটি পণ্যে ইলেকট্রনিক কবচ লাগানো রয়েছে৷ দাম মেটানোর অ্যাপের মাধ্যমে বিল দিতে হয়৷ কেমন সেই অভিজ্ঞতা? এক ক্রেতা বললেন, ‘‘এমনভাবে কেনাকেটা করতে দারুণ লাগে৷ প্রয়োজনমতো কিনে দাম মেটালেই হলো৷”

বেইজিং শহরে বিংগোবক্স কোম্পানির সদর দপ্তর৷ এমন আরও কোম্পানি চীনে প্রায় ২০০ কর্মী-বিহীন সুপারমার্কেট খুলেছে৷ এখনো পর্যন্ত কোনো বড় সমস্যা হয় নি৷ কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা চেন জিলিন বলেন, ‘‘সাধারণ সুপারমার্কেটের তুলনায় আমাদের দোকানে চুরি কম হয়৷ শূন্য দশমিক ১ শতাংশ পণ্যও উধাও হয় না৷”

জেডি-র মতো চীনের বিশাল ইন্টারনেট কোম্পানিও এমন কর্মীবিহীন সুপারমার্কেটখুলছে৷ দপ্তরের জমিতেই এমন একটি দোকান খোলা হয়েছে৷ ফেস রেকোগনিশন প্রযুক্তির ভিত্তিতে সবকিছু চলে৷ একবার অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্টার করতে হয়৷ তারপর ইচ্ছামতো পণ্য তুলে নিলেই হলো৷ বেরোনোর সময় শুধু মুখ দেখালেই চলবে৷ টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হয়৷ ম্যানেজার সং পেন বলেন, ‘‘এখনো আমরা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছি, তাই নির্দিষ্ট সংখ্যা বলতে পারবো না৷ তবে সাধারর তুলনায় এমন দোকান অনেক সস্তায় চালানো সম্ভব বলে আমাদের ধারণা৷”

চীনের মতো অন্য কোনো দেশে বোধহয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে কেনাকাটার বিষয়ে এতো উৎসাহ দেখা যায় না৷ মোবাইল ফোনের অ্যাপের মাধ্যমে বিল মেটানো, অনলাইন ডেলিভারি পরিষেবা ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অঙ্গ হয়ে উঠেছে৷ কোম্পানির কাছে সব রেকর্ড থাকছে জেনেও কেউ দমে যাবার পাত্র নয়৷

‘‘মনে হয় এটাই ভবিষ্যতের প্রবণতা৷ জীবনযাত্রা সহজ করে তুলতে নিজেদের সম্পর্কে তথ্য উন্মুক্ত করতে হবে৷ এটা মেনে নেওয়াই যায়৷” তবে ডিজিটাল প্রযুক্তি কিন্তু একটি কাজ এখনো করতে পারে না৷ দোকানের তাকগুলি এখনো নিজেরাই জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে পারে না৷

About the author

নরসুন্দা ডটকম