সোশ্যাল মিডিয়া

রুপালী গীটার ছেড়ে চলে গেলেন আইয়ুব বাচ্চু : জীবন তাপস তন্ময়

নরসুন্দা ডটকম   October 18, 2018

জন্ম-মৃত্যু। চিরায়ত এক সত্যকথন। কখনও তা মিথ্যে হবার নয়। সুযোগ নেই। জন্ম নিলে মরতে হয়। কে কখন মরবে? কে কখনই বা জন্ম নেবে? প্রশ্ন উঁকি দেয় মনের খিঁড়কি দিয়ে। কোনো না কোন সময়। অনুসন্ধিৎসু মনন-বীক্ষায় রেখাপাত করেই এই জিজ্ঞাস্য।

মানুষ কেন জন্ম নেয়? কেনইবা মরে? জন্মের আগে কোথায় ছিল মানুষ? মৃত্যুর পর কোথায় যাবে? বহতা জীবনে এই ভাবনা-বলয়ে কতোবার অনুরণন হয় মস্তিষ্ক? অহোরাত্রি। কেউ কি জানে? আমি জানি না। জানতে চেষ্টা করিনি কখনই। ইচ্ছে করে না। তবুও কখনও বা এইসব দূরবীক্ষায় এসে জীবনের বাঁক হারিয়ে ফেলি। কেন এমন হয়?

মৃত্যুচিন্তা কখন এসেছে আমার, ঠিক মনে নেই। ভালো মতন বলতে পারবো না। তবে তা বেশি দিন হয়নি। মৃত্যুচিন্তন পরিস্ফুটন হয়। রেখাপাত করে মনে-মননে। আমার বাবা যখন মারা যান, আমি দেখেছি মৃত্যু এক বিভীষিকার নাম।

আইয়ুব বাচ্চু।সংগীতশিল্পী।সংগীতজ্ঞ।এদেশে ব্যান্ড সংগীতকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পথিকৃৎ।দরাজ সুমিষ্ট কন্ঠ।কণ্ঠকে বহুমাত্রায় নানা বিভায় নানা আলোয় প্রকাশের অসামান্য সক্ষমতা ছিল তাঁর।যন্ত্রসংগীতেও বিস্মিত নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রেখেছেন।গীটারে তাঁর সমান পারঙ্গমতা এদেশে আর কেউ ছিল বলে আমার জানা নেই।গীটার জাদুকর।ছিলেন লিড গীটারিস্ট।ব্যান্ড সংগীত আর আইয়ুব বাচ্চু যেন সমার্থক।এখানে তিনি অপরিহার্য।বিকল্প নেই

শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু চলে গেছেন দরজার ওপাশে ।

শুরুতেই বেশ ক’টি ব্যান্ডদলে কাজ করেন।নব্বই দশকের শুরুতেই গড়ে তুলেন নিজের ব্যান্ডদল এলআরবি।আমৃত্যু সেটি নিয়েই কাজ করেছেন।সংগীতের এই পথ চালায় অগণিত ভক্ত তৈরি করেন।অনেককেই তিনি হাতে ধরে এনে সংগীতের পাঠ দিয়েছেন।যারা আজ অনেকেই খ্যাতি কুঁড়িয়েছেন।স্বপ্ন ছিল একটি ব্যতিক্রমী সংগীত বিদ্যায়তন করবেন।যেখানে কণ্ঠ ও যন্ত্র সংগীতে দেশবিদেশের আইকন সংগীতজ্ঞদের নিয়ে আসবেন এখানে।এদেশের সংগীত পিপাসু শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক হবে এই প্রতিষ্ঠান।

সংগীতে যখন তিনি গগনমার্গে, সাফল্যে আর সম্ভাবনায়, তখনই তিনি হৃদরোগের কবলে পড়েন! দীর্ঘদিন ধরেই তা’ বাসা বেঁধেছিল শরীরে।যা তাঁকে অকালেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়! মৃত্যুকালে হার্টের কার্যক্ষমতা।ছিল শতকরা ত্রিশ ভাগ।ইতোপূর্বেই রিং পরানো হয় হার্টে।

আজ সকালে তিনি হার্ট এটাক করেন।অজ্ঞান হয়ে পড়েন।বাসায়।তখনই তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালের নিয়ে যাওয়া হয়।আপ্রাণ চেষ্টার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।ধারণা করা হয়, গন্তব্য পথেই তিনি মারা যান।

তাঁর মৃতদেহ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে।আগামিকাল শুক্রবার সকালে কেন্দীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে।বাদ জুম্মা জাতীয় ঈদগাহ মাঠে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার তাঁকে দেশের বাড়ি চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে।পারিবারিক গোরস্থানে মায়ের কাছে চিরশায়িত হবেন এই কিংবদন্তি সংগীতবিস্ময়! তাঁর বিদেহী আত্মার চিরায়ত শান্তি কামনা করি।

জীবন তাপস তন্ময়

                                                       জীবন তাপস তন্ময় : কবি ও লেখক, ঢাকা।।

অরো পড়ুন…

দরজার ওপাশে আইয়ুব বাচ্চু : লুৎফর রহমান রিটন

জয়া-ই তো দেবী…

About the author

নরসুন্দা ডটকম