।। কান্না পেলে ।।
কান্না পেলে আমি বালিশের কাছেই যাই
কারণ বালিশই একমাত্র চোখ মুছিয়ে দেয়
মাঝে মাঝে নীরব মৃত্যুও;
গাছেদের কাছেও গেছি
নদী, পাহাড়, খোলা মাঠ, জ্যোৎস্না ভরা ছাদ
কেউ না
এরা বরং ভাসিয়ে দেয় চোখ বুক পেট
যন্ত্রণায় ফুটতে থাকে গোলাপি বাগান , গোধূলির শস্যক্ষেত
কান্না পেলে আমি প্রায়শই বালিশের কাছেই যাই।
।। পৃথিবী আর তোমার মুখ ।।
প্রায়শই বুকের মধ্যে জেগে উঠছে
স্তব্ধ ইটালি, হাইটেক আমেরিকা, চিন
হঠাৎ থমকে যাওয়া স্পেন ;
আকাশে জমে থাকা ঘন কালো মেঘের কথা;
ভেসে উঠছে থরে থরে সাজানো নীরব দেহ…
বিষন্ন চাদর গায়ে সারা আড়াল খোঁজে মানুষ
একা জ্যোৎস্না মাখে শহর।
ঠিক এসময় তোমার কথা মনে পড়ে বড্ড
হলুদ পর্দার আড়াল থেকে খুঁজি মুখ ;
নির্লিপ্ত দুই চোখ;
যে চোখের ভিতর খুঁজে পাবো চেনা পৃথিবী
যে মুখের দিকে তাকিয়ে জুড়িয়ে নেব প্রাণ
এখন প্রতিদিন বুকের ভিতর জেগে ওঠে
থমথমে পৃথিবী আর তোমার মুখ।
।। ফিকে হওয়া সম্পর্কের কথা ।।
যে ফিকে হওয়া সম্পর্কের কথা বললে গতকাল
সে আসলে অযাচিত সময়ের আশঙ্কা
হঠাৎ শূণ্যপুর থেকে ধেয়ে আসা বিষাদ ঝড়।
তাকে অন্তরে স্থান দেওয়া নিঃপ্রয়োজন।
কিছু সম্পর্কের পরিমাপ হয় না-
ডুবুরি নামিয়ে অতল স্পর্শ করা যায় না;
কিছু সম্পর্ক আয়ুহীন থেকে যায়;
গোপন গুহার ভিতর টিমটিম করা প্রদীপের মতো
জ্বলতে থাকে অনন্তকাল;
যার আভা লেগে থাকে হৃদয়ের শরীরে ।
যে ফিকে হওয়া সম্পর্কের কথা বললে গতকাল
সে আসলে রামধনু রং মেখে বসে আছে কতকাল আগে।
দীপক মান্না : জন্ম- ৯ জানুয়ারী ১৯৭৩ সালে, দঃ ২৪ পরগনা জেলার বজবজে। পুজালি শিক্ষানিকেতন পাঠরত অবস্থায় প্রথম কবিতা লেখা শুরু।প্রথম কাব্যগ্রন্থ- অজানা শিকড়ের ঘ্রাণ প্রকাশিত হয় ২০০৫ সালে কলকাতা বইমেলায়। কবিতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, এবং ছড়া লিখতে ভালোবাসেন।প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস বৃষ্টি ভেজা ফাগুন।