মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলায় কামালপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাজী তায়েব উদ্দিন আর মায়ের নাম তমিজা খাতুন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার জ্যেষ্ঠ। বোন ও ভাইয়েরা সমাজ-সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। মা-বাবা দুজনেই আজ পরলোকগত। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক। তাঁর স্ত্রী শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সংস্কারক। সন্তানেরা সবাই বিবাহিত ও স্ব-স্ব ক্ষেত্রে লদ্ধপ্রতিষ্ঠ সম্মানিত।
বর্ণাঢ্য শিক্ষাজীবন শেষে তিনি আইন পেশায় আত্মনিয়োগ করেন। শিক্ষাজীবনেই তিনি রাজনীতিতে নিজেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ফেলেন। আইয়ুব বিরুধী আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে তাঁকে কারাবরণ করতে হয়। জেলা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রলীগ নীতিনির্ধারক নেতা, গুরুদয়াল কলেজ ছাত্রসংসদ জিএস ও ভিপি , জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নীতিনির্ধারক, এমএনএ, এমপি, বিরুধী দলীয় উপনেতা, ডেপুটি স্পীকার, স্পীকার, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে সুনাম খ্যাতি ও যশস্বী হয়ে আজ তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে সামগ্রিক গ্রহণযোগ্যতায় দায়িত্বপালন করছেন।
বাংলাদেশে তিনি তৃণমূল রাজনীতির পুরুধা মহান ব্যক্তিত্ব। কিশোরগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী মতাদর্শী বিভিন্ন সংগঠনের যে সকল নেতৃবৃন্দ সুনামের সাথে দায়িত্বপালন করছেন,সবাই তাঁর অনুসারী ও তিনি সকলের রাজনীতিক শিক্ষাগুরু। সবাইকেই তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শের দীক্ষা দিয়েছেন।গড়ে তুলেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক হিসেবে। তিনি এমন রাজনীতিক যাঁকে স্বয়ং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি মণ্ডলি সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বচ্ছ, পরিশীলিত ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির প্রতীভূ, পরিমিতিবোধ পরায়ণ দূরদর্শী নেতা জননেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও ‘আমার নেতা’ সম্বোধন করতে এতটুকুন দ্বিধা করেন না! কোন এক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জননেতা আবদুল হামিদের পক্ষে নৌকা প্রতীকের বিশাল জনসভায় লক্ষ-লক্ষ মানুষের সমাগমে মিঠামন উপজেলা মাঠে অতিথি হিসেবে বক্তব্যকালে জননেতা সৈয়দ আশরাফ ‘আমার নেতা’ বলে সম্বোধন করে জননেতা আবদুল হামিদকে। তিনিও তাঁকে যথাযোগ্য মূল্যায়ন করেন।
সবার কাছে তিনি আদর্শ ব্যক্তিত্ব। ভাটিবাংলাকে তিনি সামগ্রিক সম্ভাবনায় শান্তি ও উন্নয়নের মানদণ্ডে ঈর্ষনীয় সফলতায় বিন্যস্ত করেছেন। আগামী দিনেও এর ধারাবাহিতা অক্ষুণ্ণ অটুট ও গতিশীল করতে তাঁর জ্যেষ্ঠ সন্তান জননেতা রেজওয়ান আহাম্মদ এমপি’কে স্থলাভিষিক্ত করেছেন। তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে কিশোরগঞ্জের মানুষ তাঁর সন্তানকে অকাতরে আপন ক’রে নিয়েছে। বাবার যথার্থ উত্তরসূরি হিসেবে সবার কাছে তাঁর সন্তান নিজেকে একাত্ম ক’রে নিয়েছেন। সেই একই সুর একই কণ্ঠ একই একাত্মতা গণমানুষের প্রতি! এ যেন এক অন্য হামিদ!
কিশোরগঞ্জের কৃতিসন্তান বিদগ্ধ রাজনীতিক মরহুম রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান মৃত্যুবরণ করলে নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সামগ্রিক গ্রহণযোগ্যতা নীরিখে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি জনাব মো. আবদুল হামিদকেই নির্বাচন করেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, সব রাজনীতি দলই তাঁকে দ্বীধাহীনতায় রাষ্ট্রপতি হিসেবে গ্রহণ ক’রে। ভাটিবাংলার অভিভাবক থেকে তিনি আজ বাংলাদেশের অভিভাবক হিসেবে দেশ-আদর্শ মহান ব্যক্তিত্ব। মাহিয়ান মহিরুহ!
মহামান্য আবদুল হামিদ। একটি নাম। একটি প্রতিষ্ঠান। সতত সাধনা সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় এক ঘুরে দাঁড়ানো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। আজ ২৪ এপ্রিল। রাষ্ট্রপতি হিসেবে মহামান্য আবদুল হামিদের ৪ বছর পূর্তি। ২০১৩ সালের আজকের এই দিনে তিনি দেশের ২০ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন। সফল রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি সবার অকুণ্ঠ আস্থা অর্জনে সক্ষমতায় ভাস্বর হয়ে ওঠেছেন। আজকের এই দিনে আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য ও খ্যাতিদীর্ঘ মর্যাদাবান উন্নত উচ্চকিত সুফলা সফল জীবনের আজীবন ধারাবাহিকতা কামনা করি। মানুষের প্রার্থনার আলো নিয়ে তিনি বেঁচে থাকুন মহাকালের মহানায়ক হয়ে, ঐকান্তিক কামনা।