নরসুন্দা ডটকম ডেস্ক:
ভারতের মুম্বাইয়ের সিনেমা প্রযোজক-পরিচালক করণ জোহর ভবিষ্যতে তার আর কোন ছবিতে পাকিস্তানি অভিনেতা নেবেন না – এই মুচলেকার বিনিময়ে তার ছবির বিরুদ্ধে আন্দোলন প্রত্যাহার করতে রাজী হয়েছে উগ্র হিন্দু সংগঠন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা ।
‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ নামে এই ছবিটির মুক্তি নিশ্চিত করতে এ মুচলেকা ছাড়াও সেনাকল্যাণ তহবিলে ৫ কোটি টাকা চাঁদাও দিতে রাজী হয়েছে প্রযোজকদের সংগঠনের নেতা।
ভারতের মুম্বাইয়ে চলচ্চিত্রে ভবিষ্যতে আর কোন ছবিতে পাকিস্তানী অভিনেতাকে নেয়া হবে না – এরকম একটি প্রতাবও পাস করানো হবে – সংগঠনটির সাথে এক বৈঠকে এমন আশ্বাসও দিয়েছেন প্রোডিউসার্স গিল্ডের নেতা মুকেশ ভাট।
এক পাকিস্তানী অভিনেতা আছেন বলে ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ নামের ওই হিন্দী ছায়াছবিটির প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা। পাকিস্তানী অভিনেতা ফাওয়াদ খান এতে একটি ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
ছবিটির প্রযোজক এবং মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রযোজকদের সংগঠন ও নবনির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরের মধ্যে আজ এই সিদ্ধান্ত হওয়ার সময়ে উপস্থিত ছিলেন সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাদনিস স্বয়ং।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে প্রযোজক সংগঠন ফিল্ম প্রডিউসার্স গিল্ড এবং নবনির্মাণ সেনার প্রধান মি. ঠাকরে পৃথকভাবে জানিয়েছেন যে ঠিক কোন কোন শর্তে ছবিটির মুক্তি নিশ্চিত হয়েছে।
“প্রযোজক সংস্থা একটা মুচলেকা দেবে আমাদের যে ভবিষ্যতে কোনও পাকিস্তানী অভিনেতাকে নিয়ে ছবি করবে না। এছাড়া এই ছায়াছবির শুরুর আগে উরির ঘটনায় নিহত শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে একটি বার্তা দেখাতে হবে। আর সেনা কল্যাণ তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে প্রযোজককে। এই শর্তে রাজী হওয়ায় আমরা আন্দোলন তুলে নিতে রাজী হয়েছি,” বলছেন নবনির্মান সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে।
প্রডিউসার্স গিল্ডের প্রধান মুকেশ ভাটও এই বিষয়গুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন, তবে সেনা কল্যাণ তহবিলে চাঁদার বিষয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “প্রযোজক করণ জোহর নিজে থেকেই ওই টাকা দান করতে চেয়েছেন। কারও কোনও চাপ ছিল না। এরপরে অন্যান্য প্রযোজকরাও চাঁদা দেবেন – সে ছবি সফল হোক বা না হোক।”
মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবিটির নিয়ে হুমকি দেওয়ায় বহু প্রেক্ষাগৃহই সেটির প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে। নবনির্মান সেনা এর আগেও তাদের অপছন্দের কোনও বিষয়ের ক্ষেত্রে ভাঙ্গচুর বা হামলা চালিয়েছে। তাই সকলেই তটস্থ থাকে এদের ব্যাপারে।
তাই ছবিটির প্রদর্শন নিশ্চিত করতে প্রযোজকরা এর আগে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পুলিশ সহায়তা চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে নিশ্চিন্ত না হতে পেরেই আজ এক সরাসরি আলোচনায় বসেছিলেন প্রযোজকরা।
কিন্তু যে বিষয়টি অবাক করেছে অনেককে, তা হল কোনও ছবির মুক্তি নিশ্চিত করতে চাঁদা দিতে হচ্ছে, মুচলেকা দিতে হচ্ছে আর সেই গোটা আলোচনা হচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে!
নোট: লেখা ও ছবি বিবিসি বাংলা।