চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩–০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে বার্সেলোনা।
প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে রোমা।
কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগ ৪–১ গোলে জিতেছিল বার্সেলোনা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগে মঙ্গলবার বার্সেলোনাকে হারালো রোমা। পুরো মৌসুমজুড়ে ছন্দে থাকা বার্সাকে অবিশ্বাস্য ম্যাচে হারিয়ে সেমি-ফাইনালে উঠে গেল ইতালিয়ান ক্লাবটি। ইতহাস গড়ে এইদিন কাতালান ক্লাবটির বিপক্ষে ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয় পায় রোমা। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরাইন ৪-৪ হলেও অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে এগিয়ে গেল রোমা।
প্রথম লেগে ক্যাম্প ন্যু’তে বার্সার কাছে ৪-১ ব্যবধানে হারে রোমা। সেই ম্যাচে বিশাল ব্যবধান টপকে রোমার সেমিফাইনালে উঠা ছিলো অবিশ্বাস্য। কিন্তু নিজেদের মাঠে সেই কঠিন কাজেই সফল ইতালিয়ান ক্লাবটি। দারুণ জয়ে ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমের পর এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে খেলবে তারা। রূপকথার মত এই জয়ে বার্সাকে দর্শক বানিয়ে উদযাপনে মেতে উঠলো রোমা।
স্ট্যাডিও অলিম্পিকোর মাঠে রোমা-বার্সেলোনার ম্যাচে শুরু থেকেই বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকে বার্সেলোনা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে মেসির শট গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়। এরপর আবারও মেসি-সুয়ারেজের সমন্বয়ে ভালো আক্রমণ তৈরি করে বার্সা। কিন্তু পরক্ষণেই বার্সার দুর্বল রক্ষণের সুযোগ নিয়ে পাল্টা-আক্রমণ থেকে গোল খেয়ে বসে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে ডেনিয়েল রোসির লম্বা ক্রস থেকে বল পেয়ে যান রোমার জেকো। বার্সার জালে বল জড়াতে জোকোর কোনো সমস্যা হয়নি (১-০)। চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে এ নিয়ে শেষ তিন ম্যাচে তিন গোল করেন জেকো। ম্যাচের শুরুতেই গোল হজমের ধকল সামলাতে বার্সাকে বেশ সময় নিতে হয়েছে। অন্যদিকে, ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে রোমা অনেকটা উজ্জীবিত হয়ে খেলে। বেশ কয়েকটা ভালো সুযোগও তৈরি করে তারা।
ম্যাচের ২৯তম মিনিটে বেশ ভালো সুযোগ পায় রোমা। ফ্যাজিওর দুর্দান্ত ক্রস থেকে প্যাটট্রক শিক ঠিকঠাক মাথা ছোঁয়াতে পারলেই রোমা ২-০–তে এগিয়ে যেত। কিন্তু সেটা হয়নি। তাঁর হেড ঠিকানা খুঁজে না পেলে ১-০–তেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় স্বাগতিকদের। ৩২তম মিনিটে আবারও ভালো সুযোগ পায় রোমা। এবার পিকের স্লাইডিং ট্যাকলে রক্ষা পায় কাতালানরা।
নিজেদের আর ফিরে পায়নি বার্সা। উল্টো দুই গোল হজম করে বসেন মেসি–সুয়ারেজরা। রোমার পক্ষে ৫৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন ডেনিয়েল ডি রোসি।
রোমার ফরোয়ার্ড জেকোকে ফাউল করেন বার্সার রক্ষণ সামাল দেওয়া জেরার্ড পিকে। পেনাল্টি থেকে গোলসংখ্যা বাড়ান রোসি (২-০)। এই রোসিই প্রথম লেগে আত্মঘাতী গোল করেছিলেন। এরপর ৮২তম মিনিটে বার্সার কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন মানোলাস (৩-০)। মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রথম লেগে মানোলাসও আত্মঘাতী গোল করেছিলেন। রোমার তৃতীয় গোলের পর বার্সার সেমিতে ওঠার স্বপ্নও বুঝি শেষ হয়ে গেল। কারণ, এরপর আর ম্যাচে ফিরে আসতে পারেনি বার্সেলোনা। প্রথম লেগে ৪-১ গোলের জয় আর দ্বিতীয় লেগে ৩-০ গোলের হার। অ্যাওয়ে গোলের হিসাবে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিল বার্সেলোনা।
শেষ পর্যন্ত চরম হতাশার হার নিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় হতে হলো পাঁচবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনাকে।