তুহিন শুভ্র মন্ডল, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।। শোকের ছায়া ভারতীয় ফুটবলের আকাশে।শুধু ফুটবল কেন সমগ্র ক্রীড়া মহলে। কারণ চুনী গোস্বামী। ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তী। তিনি গতকাল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন। শোকসন্তপ্ত ভারতীয় ফুটবল জগত।
এর কিছুদিন আগে ভারতীয় ফুটবলের আকাশ থেকে চিরবিদায় নিলেন আরেক কিংবদন্তী প্রদীপ বন্দোপাধ্যায়। পিকে নামেই যিনি সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। শুধু ফুটবলার হিসাবে নয়, পিকে বিখ্যাত কোচ ছিলেন। ফিফার সর্বোচ্চ পুরস্কার প্রাপক হিসাবে এশিয়ার একমাত্র ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন।
খেলাধুলা ভালবাসতাম এবং এখনও ভালবাসি। ফুটবলও খুব প্রিয়। বন্ধুবান্ধবরা সেকথা জানে। ছোটবেলা থেকেই পেপারে খেলাধুলার খবর গোগ্রাসে গিলতাম। তাই খুব ছোটবেলা থেকেই চুনী গোস্বামীর নাম জানি।ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তী। ভারতীয় ফুটবলে পিকে- চুনী- বলরাম, একসাথে উচ্চারিত হয় এই নাম। হ্যাঁ এখনও। বিখ্যাত বাঙালী ফুটবলার চুনী গোস্বামীকে বলা হয় ভারতীয় ফুটবলের গ্ল্যামার বয়। সেই গ্ল্যামার বয় আসলে সেইসময়কার অবিভক্ত ভারতবর্ষের বর্তমান বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের সন্তান।
অবাক হচ্ছেন তো! তাহলে জানিয়ে রাখি, শুধু তাই না 1955 সালে তিনি কিশোরগঞ্জের আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন।এই পর্যন্ত পড়ার পর অবাক হচ্ছেন তো! যে আপনার মতই এশিয়ার সেরা স্ট্রাইকারের পুরষ্কার পাওয়া এই প্রথিতযশা ফুটবলারের ছেলেবেলা কেটেছে নরসুন্দা নদীকে সাক্ষী রেখেই! তারপর অবশ্য বাবার রেলের চাকরির জন্য কলকাতায় চলে আসতে বাধ্য হন।
তারপর ধীরে ধীরে ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তীতে পরিণত হন। 1962 সালের জাকার্তা এশিয়ান গেমসে ফুটবলে সোনা জয়।পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দ্বারা প্রদত্ত সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গবিভূষণ’, ভারত সরকার প্রদত্ত ‘পদ্মশ্রী’ পুরষ্কার প্রাপক, ভারতবর্ষের প্রখ্যাত ক্লাবের তরফে মর্যাদাকর ‘মোহনবাগান রত্ন’ প্রাপ্ত এই ফুটবলার ভারতবর্ষের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসাবেও পরিগণিত হন। ভারতবর্ষের ঘরোয়া ক্রিকেটের সর্বোচ্চ মাইলস্টোন রঞ্জি ক্রিকেটে তিনি বাংলার নেতৃত্ব দেন। রঞ্জি ট্রফি রানার্স হয় বাংলা। প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। তিনি অসাধারণ লন টেনিস খেলতেন। হকি খেলতে ভালবাসতেন।তালিকাটা দীর্ঘ।
এদিকে পি কে ব্যানার্জী গত 20 মার্চ আমাদের ছেড়ে পরলোকগমন করেছেন। বাঙালির আবেগ, ফুটবলের মক্কা কলকাতা তথা ভারতীয় ফুটবলের বিখ্যাত তিন প্রধান ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডানে না খেলেও তিনি ছিলেন সুপারস্টার। প্লেয়ার দের জন্য তাঁর বিখ্যাত ভোকাল টনিক আজও চর্চার বিষয়। কোচ হিসাবে পিকের চির প্রতিদন্ধী ছিলেন অমল দত্ত। সে সময় কত না রোমহর্ষক ফুটবল উপভোগ করেছে ফুটবলপ্রিয় বাঙালী।ফুটবল বোদ্ধাদের মতে, ভারতবর্ষের সর্বকালের সেরা ফুটবল ব্যক্তিত্ব ছিলেন পি কে ব্যানার্জী। দেশের অলিম্পিক, এশিয়ান গেমস, মারডেকা ট্রফি কোথায় করেননি গোল! আর কোচ হিসাবে ভারতীয় ফুটবলকে উপহার দিয়েছেন একের পর এক বিখ্যাত সব ফুটবলার।