দেশ-বিদেশ

দক্ষিণ স্পেনে তিমির মৃতদেহ থেকে পাওয়া গেল ৬৪ পাউন্ড প্লাস্টিক

নরসুন্দা ডটকম   April 17, 2018
দক্ষিণ স্পেনে তিমির মৃতদেহ

প্রথমত তিমিরা বিপন্ন প্রজাতির। সেই সঙ্গে মানুষের অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহার তাদের আরও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সম্প্রতি দক্ষিণ স্পেনের মুরসিয়া উপকূল থেকে মিলেছিল ছয় টনের একটি ‘স্পার্ম হোয়েল’-এর মৃতদেহ। তার মৃত্যুর কারণ যাচাই করতে গিয়ে চমকে উঠেছিলেন চিকিৎসকেরা। এক-আধ কেজি নয়, ওই বিপন্ন প্রজাতির তিমির পাকস্থলী আর ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে মিলেছিল ৬৪ পাউন্ড ওজনের প্লাস্টিক। তা হজম করতে না পেরেই প্রাণীটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।

এতেই বিপদ দেখছেন পরিবেশবিদেরা। এ ভাবে চললে বিপন্ন বা বিরল সামুদ্রিক প্রাণীরা আর কত দিন সুস্থ ভাবে বাঁচতে পারবে, তা নিয়ে শঙ্কিত তাঁরা। এমনিতে একটি স্পার্ম হোয়েলের আয়ু মানুষের মতোই। কমপক্ষে সত্তর বছর বাঁচে তারা। কিন্তু প্লাস্টিক ব্যবহারে বিশ্বের প্রতিটি সমুদ্র আর মহাসাগর যে ভাবে কলুষিত হচ্ছে, তাতে এই ধরনের তিমির বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদেরা।

স্পেনে তিমির মৃতদেহ থেকে ৬৪ পাউন্ড প্লাস্টিক পাওেয়া গেছে।

মুরসিয়া থেকে উদ্ধার হওয়া তিমিটি ছিল প্রায় ৩৩ ফুট লম্বা। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দেহটি ময়নাতদন্ত করে প্লাস্টিক ব্যাগ, জাল, দড়ি, প্লাস্টিকের বস্তা এমনকী প্লাস্টিকের জ্যারিক্যানও পাওয়া গিয়েছিল। প্লাস্টিক থেকে ব্যাক্টিরিয়া ও ছত্রাক সংক্রমণ হয়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে মারা যায় তিমিটি।

একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে ৫ লক্ষ কোটিরও বেশি প্লাস্টিকের তৈরি দ্রব্য ভেসে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন সাগর-মহাসাগরে। এ ভাবে চলতে থাকলে আগামী তিরিশ বছরের মধ্যে সমুদ্র থেকে মাছ উধাও হয়েও যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

ওই স্পার্ম হোয়েলের মৃতদেহ উদ্ধারের পরে টনক নড়েছে মুরসিয়া সরকারেরও। সমুদ্র উপকূলে প্লাস্টিক ব্যবহারে কড়া হয়েছে সেখানকার আঞ্চলিক সরকার।
তাদের সঙ্গে কিছু কিছু দেশও সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছে। পুনর্ব্যবহার করা যায়, এমন প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে নির্দেশিকা জারি করেছে তারা। কেউ আবার জরিমানা চাপিয়েই দায় সারতে ব্যস্ত।

About the author

নরসুন্দা ডটকম