শিশু ধর্ষণকারীর সাজা মৃত্যুদণ্ড করলো ভারত। রবিবার, দেশটির মন্ত্রিসভার পাশ করা অধ্যাদেশটি সই করেন প্রেসিডেন্ট। নতুন আইনে ১২ বছরের কম বয়সী শিশু ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি। আর, যেকোনো ধর্ষণের ঘটনায় সর্বনিম্ন সাজা ১০ বছরের জেল, সর্বোচ্চ আমৃত্যু কারাবাস।
ভারতের কাশ্মিরে ৮ বছর বয়সী শিশু ‘আসিফা ধর্ষণ ও হত্যা’র ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে আইনে সংশোধন আনলো মোদি সরকার। জম্মু-কাশ্মিরে ৮ বছর বয়সী শিশু আসিফার ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ভারতে বিক্ষোভ চলছে ক’দিন ধরেই। কেবল আসিফার জন্য ন্যায়বিচার নয়, শিশুর ওপর বর্বরতা ঠেকাতে, আইন কঠোর করার দাবি তোলেন, ক্ষুব্ধ মানুষ। সোচ্চার হন বিরোধী রাজনীতিকরাও।
কমনওয়েলথ সম্মেলন শেষে শনিবার দেশে ফিরেই মন্ত্রিসভা বৈঠকে ধর্ষণের সাজা বাড়ানোর অধ্যাদেশ পাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোববার, সে অধ্যাদেশে অনুমোদন দেন প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। পার্লামেন্টের আসন্ন অধিবেশনের আইনে চূড়ান্ত সংশোধনের বিষয়েও আশাবাদী বিজেপি।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, অধ্যাদেশের মাধ্যমে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার এই সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক। এর মাধ্যমে, ধর্ষকদের উচিৎ শিক্ষা হবে। জঘণ্য কর্মকাণ্ডের জন্য মৃত্যুদণ্ডই হওয়া প্রয়োজন। নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সবচেয়ে কঠোর শাস্তি হবে ১২ বছরের কমবয়সী শিশু ধর্ষণের ক্ষেত্রে। ধর্ষকের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড, সর্বনিম্ন ২০ বছরের জেল। প্রাপ্তবয়স্কদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সাজা ৭ বছর থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ বছর। অপরাধীর সাজা বাড়ার বিধানে, স্বস্তি প্রকাশ করেছে ধর্ষিতা শিশুদের পরিবার।
জম্মু-কাশ্মিরে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ৮ বছর বয়সী শিশু আসিফার অভিভাবকরা বলেন, আমার মেয়ের মৃত্যু হলেও, ন্যায় বিচার পেতে যাচ্ছি আমরা। কেননা, আইনে বলা হয়েছে, ১২ বছরের নীচের শিশুদের ধর্ষণকারীদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আসিফার বয়স ছিলো মাত্র ৮ বছর।
অবশ্য অনেকেই বলছেন, বয়সভেদে শাস্তি নিরূপণ করা ঠিক হয়নি। কারণ, ধর্ষণ একটি মেয়ের জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা। আজীবন সে ভুলতে পারে না। তাই, যেকোনো ধর্ষকের শাস্তিই মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিৎ। ধর্ষকের সাজা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানোর বিধানও রাখা হয়েছে নতুন অধ্যাদেশে। সবশেষ, ২০১২ সালে নয়াদিল্লিতে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর এ অপরাধের আইন সংশোধন করেছিল ভারত।