পেটে বাচ্চা নিয়ে খাবারের খোঁজে বন থেকে লোকালয়ে এসেছিল হাতিটি। তারপর সামনে থাকা আনারস খেয়েছিল। কিন্তু কিছু মানুষ সেই আনারসে ভরে রেখেছিল পটকাবাজি। হাতিটির মুখেই তা বিস্ফোরিত হয়। এক নদীতে দাঁড়িয়ে অসহায় আহত হাতিটি তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে।ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালার পালাক্কাড় জেলায়, গত ২৭ মে বুধবার।
সত্যি বলার কোনো ভাষা নেই। মানুষ যে কতটা নৃশংস ও কতটা ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। জাতীয় অরণ্য ঘোষণার পরও সাইলেন্ট ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের ভিতর মানুষের বসবাস দিনে দিনে প্রচুর পরিমানে বেড়েছে এবং যে কারণে বারবার বন্যজীবন এর সাথে মানুষের সংঘাত বেড়েই চলেছে।
তবে এই ঘটনা বন্যপ্রান সংঘাতের সব মাপকাঠিই ছাপিয়ে গেছে। গোটা দেশ এই ঘটনার সাথে জড়িত যে বা যারা ছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। আসলে ভারতের মত দেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা একটি বিরাট সমস্যার কারণ জাতীয় উদ্যানগুলি ও আজ আর সুরক্ষিত নয় বন্য প্রাণীদের জন্য। দেশের অভয়ারণ্যগুলির ভেতর যেভাবে multi-storied বিল্ডিং, হোটেল, সড়ক, রেলপথ নিয়ে যাওয়া হয়েছে এমনকি জঙ্গলের জমি বিক্রি হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে।
ভারতবর্ষের মোটামুটি সব কটি অভয়ারণ্য যদি আপনি প্রবেশ করেন সেখানেও আপনি 4জি নেটওয়ার্ক, ও অনায়াসে অপারেট করতে পারবেন। কী নেই সেখানে বিলাসবহুল রিসর্ট, জঙ্গল সাফারি জন্য মাত্রাতিরিক্ত গাড়ি ও পর্যটক। এমনকি জুন-জুলাই মাসে জঙ্গলে প্রজনন মরশুমের সময় ও পর্যটক এর প্রবেশ অবাধ করেছে সরকার। পর্যটকদের ফেলে আসা প্লাস্টিক ও আরো অন্যান্য সামগ্রী জঙ্গলের পরিবেশকে ভীষণভাবে কলুষিত করেছে।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর বঙ্গে অবস্থিত গরুমারা জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে একইভাবে সড়কপথ ও রেলপথে প্রতি বছর যে অগুনিত পশুপাখি প্রান হারায় তার অনেক কমই সরকারি খাতায় নথিভুক্ত হয়। জঙ্গল রক্ষার নামে যে অগ্রাসন দিনে দিনে বাড়ছে তাতে মানুষের সাথে বন্যপ্রাণীর সংঘাতের যে আরো বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অনুপ হালদার : কলকাতার নদী সুরক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক।
কাপ ডিশ ও ভাঙা সকাল ।। ঋভু চট্টোপাধ্যায়