আজ উলিপুর সমিতি, ঢাকা’র উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বুড়ি তিস্তা নদী দখলমুক্ত করা ও পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবীতে প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দেশের উত্তর জনপদের কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় গত দুই মাস ধরে চলমান নদী রক্ষা আন্দোলনের সমর্থনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ঢাকায় বসবাসরত উলিপুরবাসী ছাড়াও পরিবেশ আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
উলিপুর সমিতি, ঢাকার আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ন আহ্বায়ক মঞ্জুর মোর্শেদ মিল্টন, সদস্য জুলফিকার আলী সেনা, আমজাদ হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, পরিবেশ বাঁচা আন্দোলন (পবা)’র সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের খান, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব মিহির বিশ্বাস, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর যুগ্ম মহাসচিব পুলক কুমার ঘটক, দৈনিক কুড়িগ্রাম এর ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান সেলিম কুড়িগ্রাম সমিতি, ঢাকা এর মহাসচিব সাইদুল আবেদিন ডলার সহ আরও অনেকে। মানববন্ধন কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন সমিতির সদস্য সচিব আসাদুল হক।
বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে বলেন, বুড়ি তিস্তা একটি অতি প্রাচীন খরস্রোতা নদী। এই নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তিস্তা ও বুড়ি তিস্তার সংযোগস্থল থেতরাই-এ একটি স্লুইচগেট ছিল। ১৯৮৮ সালের প্রলয়ংকারী বন্যায় এ স্লুইচগেটটি বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ নদীর উৎসমুখে স্লুইচগেট ছাড়া একটি বাধ নির্মাণ করলে বুড়ি তিস্তা মরুকরণের শিকার হয়। এককালের খরস্রোতা নদীটি ধীরে ধীরে ভরাট হতে থাকে।
বক্তারা আরো বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, দায়িত্বহীনতা এবং একদল ভূমিদস্যুর কবলে পড়ে বুড়ি তিস্তা নদী আজ মৃতপ্রায়। তারা বলেন, এই নদী ভরাট করে বর্তমানে প্লট বিক্রি হচ্ছে। মার্কেট ও কারখানা তৈরী করা হচ্ছে।
মানববন্ধন থেকে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। বুড়ি তিস্তা নদীর উৎসমুখ খনন, স্লুইটগেট পুণঃনির্মাণ করা, সকল অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদী দখলমুক্ত করা, নদীর তলদেশ খনন করে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকায় উলিপুর সমিতি আগামীতে সর্বাত্বক আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়েছে।
বক্তাগণ বলেন, নদী প্রকৃতির প্রাণ, নদীর মৃত্যু মানে প্রকৃতির মৃত্যু। বুড়িতিস্তা নদীকে যে কোন মূল্যে রক্ষা করতে হবে। বুড়িতিস্তাকে দখলমুক্ত করে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। অবিলম্বে দাবী আদায় না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।