ফুটবল জাদুকর সামাদ এদেশে কোন নামকরা ট্রফি এনে দিতে পারেনি, তিনি সেরা হলেও সেরা একাদশ পাননি। সাকিব আল হাসান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হয়েও দেশকে বিশ্বকাপ এনে দিতে পারেননি এখনও। বিশ্ব মিডিয়াতেও তেমন মাতামাতি নেই। ফুটবলে সাফ গেমসে স্বর্ণ এনেছিলো অধিনায়ক মোনেম মুন্না। এরপর ঘাতক ক্যান্সার থামিয়ে দিলো তার জীবন। আর তামিম মাশরাফির অর্জন জৌলুস ছড়ায় না। সার্বিক ফলাফলে জিরো। এসব কেন বলছি জানেন? বিশ্বামিত্র রাজনীতির গোল্ডল্যান্ড ব্রিটিশদের লেবারপার্টি দিয়ে নীতির রাজা বলে খ্যাত রাজনীতির হাতেখড়ি নিয়েছিলেন যিনি তিনি সদ্য প্রয়াত জননেতা সৈয়দ আশরাফ। কোটি মানুষের হৃদয়ের কফিনে পেরেক দিয়ে আজ কফিনবন্দী হয়ে এসেছিলেন জন্মভূমি কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে।স্বচ্ছ ও শুদ্ধ রাজনীতির প্রবর্তক। ভালবাসা কেমনে চোখের জলের ভাষা হয়ে মাটিকে পবিত্র করে তাই দেখলাম। ধন্য মানবজনম, ধন্য রাজনীতি। রাজনীতি আজ যেখানে ঘৃণার পাত্র, সেখানে সৈয়দ আশরাফ বিপরীত।নীতির পাহাড় আর সততার দেয়াল কত উঁচু তা প্রমান করে গেলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আমি ব্যক্তিগতভাবে দু’জন নেতাকে স্বচ্ছ রাজনীতির প্রতীক মনে করি।একজন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ, আরেকজন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। রাজনীতির ব্যাসিকপাঠ ও মানদন্ডের যথার্থ উদাহরণ দু’জনের জীবনাচার পড়লে বুঝা যায়। এদেশে অনেক রাজা, উজির- নাজির পারিষদবর্গ আসবে যাবে।কিন্তু সৈয়দ আশরাফ আর আসবেন না। স্বাধীন বাংলাদেশ ও আওয়ামী রাজনীতির ইতিহাস বড়ই নির্মম। ত্যাগী আর ভোগীদের খপ্পরে বারবার আওয়ামী রাজনীতি।এর মধ্য নিঃস্বার্থ জীবনদান শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের যথার্থ রক্তধারা সৈয়দ আশরাফ।একটি নাম, একটি মহাকাব্য। শিক্ষায় এপ্লাস স্কলারশীপ আসছে অহরহ। কিন্তু একজন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জগদীশ পাচ্ছে না এ জাতি। রাজনীতির চর্বিত চর্বনে কতো মুকুট আসছে যাচ্ছে।কিন্ত এ লেবারল্যান্ডে কায়িক নেতা আসছে কই? সততা আদর্শিক নেতার মড়ক লেগেছে জাতীয় রাজনীতিতে। ফটোবাজি আর রাজকোষের প্রতি লোভ বটবৃক্ষ বানাচ্ছে প্রচলিত ধারার রাজনীতি, এদেশের নেতাদের।
গরীব নিয়ে রাজনীতি করে নেতারা ধনী হচ্ছে। ২০১৪ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমৃলের কর্মীদের ডেকেছিলেন গণভবনে।কিশোরগঞ্জে জেলার একজন তৃণমৃলের কর্মী হিসেবে [ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) আমিও ইয়েসকার্ড পেয়েছিলাম।মিটিং শেষে গণভোজ।কি সৌভাগ্য আমার সেদিন গণভোজে আশরাফ সাহেব কিশোরগঞ্জবাসীদের সাথে দুপুরের খাবার খেলেন।তাও আমি যে টেবিলে বসলাম সেই টেবিলে। কি আনন্দ ভাবা যায় না।সবাই যার যার মতো পছন্দের খাবার খেলেন।আশরাফ সাহেব ভেজিটেবলের সাথে শুধু কাতলা মাছের মাথা নিলেন। অবাক নেত্রে দেখলাম একজন আপাদমস্তক বাংঙ্গালীর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বড় মাছের মাথা খাওয়া।
রাজনীতি যদি জনসেবা, দেশসেবা আর নীতির রাজা হয় তবে সেই রাজার নাম সৈয়দ আশরাফ। দূর্বল নৈতিকতা আর রাজনীতি এক হতে পারে না।তাই শপথের আগেই বিদায় নিলেন?……. মহান শুদ্ধ।
নার্ভাস নাইনটি নাইন আজকের পর্ব। আর আজকেই নতুন মন্ত্রী পরিষদ গঠন।নির্মমতার সহোদর বিপ্লবীর……ইতিহাস তাই বলে। ইতিহাস আর সভ্যতার সভ্য জাগরণে শুদ্ধতার দর্শন সবমসময় পোঁড় খায়।বিপ্লবী চে, কামাল আতাতুর্ক, নেতাজি সুভাষ বসু,সালভাদর আলেন্দ নেলসন ম্যান্ডেলা প্রমুখ মহান ব্যক্তিদের জীবনাচার আর ভাগ্যলিপি তাই বলে।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বেলায় তা অনবদ্য। স্বপ্নের সোনার বাংলার স্তপতি জাতিরজনক আর শুদ্ধ রাজনীতির প্রবর্তক সৈয়দ আশরাফ।স্বপ্নপূরনের কৃষ্ণসারথী। বেঁচে রবে কোটি বাঙ্গালীর হৃদয়ে।মুজিব দর্শনের প্রেম যে সেরা অনুভূতি। তাইতো ইতিহাসসেরা কালোর্ত্তীন নীতির রাজা তুমি লও হে সালাম। আলোকিত অতীত সৃর্য্যের উত্তরাধিকার। তোমার নীতি ও আদর্শ সতেরকোটি বাঙ্গালীর চৌত্রিশকোটি নেত্রের বারিধারা হয়ে ঝরতে থাকুকঃ কাল কালান্তরে।
আফজল হোসেন আজম : শিক্ষক ও নদী রক্ষা আন্দোলন কর্মী, তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ।