আমাদের দেশে যখন করোনা রোগী সনাক্ত হয়নি। সৌদি আরবে তখন পুরোদমে সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। অনেক পরে আমাদের দেশে সনাক্ত হলেও অল্পদিনেই করোনাভাইরাস সংক্রমণে ১৫৭২ জন(১৫/০৪/২০২০ পর্যন্ত ) আক্রান্তের বিপরীতে মৃত্যু ৫০ জনের। অন্যদিকে অনেক আগে থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরও সৌদি আরবে করোনাভাইরাস সংক্রমণে ছয় সহস্রাধিক আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু ৬০ জনের। অর্থাৎ অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় আমাদের মৃত্যু হার ব্যাপক।
কারণ আমাদের স্বাস্থ্যসেবা অতি দূর্বল ও নিম্নমানের। হ্যা এটা ঠিক সৌদি আরবের অর্থনৈতিক অবস্থা আর আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থান এক নয়। তবে অতি আত্মবিশ্বাস এবং অতিকথন বাদ দিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থায় জোর দিলে মহামারীর রূপ অনেকটাই কম হতো বলে বিশেষজ্ঞ মত।
প্রথম থেকেই বিদেশ ফেরতদের বিষয়ে কঠোরতার আশ্রয় নিয়ে তাদের বাধ্যতামূক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নিতে পারলে মহামারীর প্রকোপ এতো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তো না। অথচ আমাদের মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্ব-দর্পে প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন- আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। এখন বোঝা যাচ্ছে কি অব্যবস্থাপনার মধ্যে করোনা চিকিৎসা চলছে। এক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কারোরই কথায় কোনো লাগাম নেই।
আমরা জানি, আমাদের এই জনবহুল দেশের এতো এতো করোনা রোগীর ভাড় বহন করার ক্ষমতা নেই। তা আমাদের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় যতই বলুন – করোনা মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত।
আরও পড়তে পারেন….
ইতালী থেকে বৃটেনবাসীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি
আমরা দেখলাম দেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকাতেই কুয়েতমৈত্রী হাসপাতালে সার্জিক্যাল মাস্ক ছাড়া কর্মকর্তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে (সুত্র- যমুনা টিভি, ১৫/০৪/২০২০)। হালে দৈনিক প্রথম আলোয় বের হওয়া খবর অনুযায়ী খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় থেকেই হাসপাতালে এন-৯৫ মাস্ক নাম দিয়ে সাধারণ মাস্ক পাঠানো হয়েছে।
এর থেকে দেশের স্বাস্থ্য খাতের সার্বিক চিত্র অনেকটা বোঝা যায়। আর আমরা বাঙালিরা নিয়ম না মানায় চ্যাম্পিয়ন। কোথাও আমার হারিয়ে যেতে নেই মানা” এই তরিকায় বিশ্বাসী হয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ছি। কেউ নিয়ম মানছি না। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং ডাক্তার -নার্সসেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আর এদিকে আমরা যেন পণ করেছি “মরবোই”। পাড়া মহল্লায় হরহামেশাই আড্ডায় মেতে উঠছি, কারো কোনো বিকার নেই। ঘরে থাকাই যখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের থেকে বেঁচে থাকার এক এবং একমাত্র পথ। আসুন না ঘরে থাকি, নিজে বাঁচি, অন্যকে বাঁচাই। নিজে নিরাপদ থাকি, দেশকে নিরাপদ রাখি।
মুহাম্মদ শামীম রেজা : গল্পকার, কিশোরগঞ্জ।