সাহিত্য ডেস্কঃ
‘অবনী ও অবনী বাড়ি আছো’
সদর দরজা বন্ধ। কবাটে ঝুলছে লোহার তালা
মড়কটা সাতচল্লিশের মাকড়সার জাল মন্বন্তর
ধূলোর ঝুল, ঝুলে আছে তবুও জানালা বন্ধ
খোলা মাঠে শিমুল তলায় দাঁড়িয়ে-কেউ ডাকেনি
কেউ বলেনি অবনী ও অবনী তুমি বাড়ি আছো?
সাতচল্লিশের দেশভাগ। বেড়ি ধর্মতত্ত্বের কাঁটাতার
একাত্তরে আগুনের খেলা, নতজানু তুমি আমি সে
বিষবৃক্ষের চৌচালা ঘর রক্তে ভেজা শিমুলের তল-
ওখানে দাঁড়িয়ে আদরে-আবদারে কেউ ডাকেনি
কেউ বলেনি অবনী ও অবনী তুমি বাড়ি আছো?
দরজাটা বন্ধ। ঘুনে ধরা কবাট-তবুও দরজা বন্ধ
অন্ধ শীতলক্ষ্যা বুড়িগঙ্গা করতোয়া জীবনানন্দ
উলুখড়ে আগুন জ্বলে শূলে জ্ঞান পাপের অনলে
তবুও দাঁড়িয়ে-স্থির হয়ে কেউ ডাকেনি কখনও
কেউ বলেনি অবনী ও অবনী তুমি বাড়ি আছো?
হাঠৎ আগুনে কুশপুত্তলিকা নব্বইয়ে স্বৈরশাসক
পতনের গান বুকের গহনে কাননে ধরেছে অবক্ষয়
কাঁটাতারে দুপাড়ে ভাঙছে মসজিদ-ভাঙছে মন্দির
কে যেন বন্ধ দরজায় কষাঘাতে খুলে অবণীর ঘর
তবুও বলেনি অবনী ও অবনী তুমি বাড়ি আছো?
খোলা দরজা। অন্ধকারে নিমজ্জিত অবনীর ঘর
অবনী নেই কস্মিনকালেও ছিল না সেই বদ্ধ ঘরে
দেওয়ালে তাকে টিনের পেটরা দাঁত কেলিয়ে হাসে
ছিন্ন পত্রের সংলাপ জড়িয়ে আমার সোনার বাংলা
তবুও কেউ ডাকেনি অবনী ও অবনী তুমি বাড়ি আছো?