দেশ-বিদেশ

ইউরোপের দেশে দেশে আধুনিক দাসপ্রথা চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া

নরসুন্দা ডটকম   এপ্রিল ১৮, ২০১৮
আধুনিক 'দাসপ্রথার চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন নজিরবিহীন একটি বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।  একটি অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ইউরোপের দেশে দেশে উত্তর কোরিয়ার আধুনিক এক ‘দাস প্রথার’ তথ্য।

যার শিকার উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরাই। এদের বিদেশে শ্রমিক হিসেবে পাঠানো হলেও এদের উপার্জিত অর্থ ব্যয় হয় অন্যের স্বার্থে। ধারণা করা হয় যে প্রতি বছর উত্তর কোরিয়া থেকে দেড় লাখের মতো মানুষকে দেশটির সরকার বিদেশে পাঠায় শ্রমিক হিসেবে যাদের প্রধান কাজ আসলে সরকারের জন্য অর্থ প্রেরণ করা। এবং মনে করা হয় যে এ অর্থের পরিমাণ বছরে প্রায় এক বিলিয়ন পাউন্ড। যুক্তরাজ্যে দেশটির সাবেক উপ রাষ্ট্রদূত থায় ইয়ং হো জানাচ্ছিলেন এ অর্থ আসলে পারমানবিক কর্মসূচিতে ব্যয় করে উত্তর কোরিয়া সরকার।

“এ টাকাটা যদি শান্তিপূর্ণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় হতো দেশের অর্থনীতি এখন আরও অনেক ভালো অবস্থানে থাকতো। তাহলে এ অর্থ কোথায় যায়?এগুলো যায় কিম পরিবারের বিলাসী জীবন যাপন, পারমানবিক কর্মসূচি আর সামরিক বাহিনীর জন্য। এটাই প্রকৃত সত্যি”।

রাশিয়ায় একজন উত্তর কোরিয়ার শ্রমিক জানান যে তাদের আয়ের সব চলে যায় দলনেতার কাছে এবং তিনিও একজন উত্তর কোরিয়ান। এসব শ্রমিকদের মধ্যে একজন কথা বলতেও রাজী হন।

” এখানে আমাদের সাথে কুকুরের মতো আচরণ করা হয় এবং আপনাকে খেতে হবে ময়লা খাবার। সব টাকাই দিয়ে দিতে হয় আর একে বলে পার্টি ডিউটি। আর কেউ বলে রিভলিওশনারি ডিউটি বা বৈপ্লবিক দায়িত্ব। যারা দিতে পারবেনা তারা এখানে থাকতে পারবেনা। দশ বছর আগেও এটা ছিলো ২৬০ পাউন্ড আর এখন এটা প্রায় দ্বিগুণ”।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলোর বিভিন্ন কোম্পানিতে নানা ধরনের কাজে আছে বেশ কিছু উত্তর কোরীয়। পোল্যান্ডে তেমনি একটি জায়গায় কাজ করছেন এমন একজন কথা বলেছেন বিবিসির সাথে।

“আমাদের লোকজন পোল্যান্ডে আছে শুধু কাজ করতে। ছুটির দিনগুলোতে তারা কোন টাকা পয়সা পায়না। কোন কাজ শেষ করার যখন কোন তাড়া থাকেনা তখন কোন বিশ্রাম না নিয়েই আমরা কাজ করি। পোলিশরা যেখানে আট ঘণ্টা কাজ করে বাড়ি যায় আমরা সেখানে কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করেই যাই।

ওয়ারশোতে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস অবশ্য বলছে তাদের নাগরিকরা পোলিশ ও ইইউ র নিয়ম কানুনের মধ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। পোল্যান্ড সরকার জানিয়েছে তারা প্রতিনিয়ত বিষয়টি মনিটর করে এবং এখনো তারা এমন কোন প্রমাণ পায়নি যে এসব শ্রমিকের আয় করার অর্থ উত্তর কোরিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

About the author

নরসুন্দা ডটকম