প্রকৃতি

বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস: এখন ঘরে বসে পৃথিবীকে মনে রাখার দিন- তুহিন শুভ্র মন্ডল

নরসুন্দা ডটকম   এপ্রিল ২৩, ২০২০
বসুন্ধরা

তুহিন শুভ্র মন্ডল : না, পৃথিবীকে মনে রাখার জন্য কোন একদিন হতে পারেনা। বলতে চাইছি তার জন্য কোনো একটি নির্দিষ্ট দিন হতে পারে না।প্রতিদিনই বসুন্ধরা দিবস। তবুও বসুন্ধরার গুরুত্ব বোঝাতে রাষ্ট্রসংঘ প্রতিবছর 22 এপ্রিল দিনটিকে বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।সেইমত বিভিন্ন দেশ, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রকৃতিবাদী সংস্থা এই দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে।

কিন্ত এবছরের বিষয়টা একটু আলাদা। কারণ একটাই করোনা। লকডাউনের সময়। তাই ঘরে থাকার সময়।কিন্ত ঘরে বসেও তো পৃথিবীর কথা মনে রাখা যায়। বসুন্ধরা আর তার মানবজগত আক্রান্ত। COVID- 19 মানবসভ্যতাকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। এই প্রথম বার করোনা ভাইরাসের জন্য পৃথিবী জুড়ে বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস উদযাপনে ডিজিটাল মবিলাইজেশনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

1970 সালে প্রথম বার বিশ্বজুড়ে পালিত হয়েছে বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস। এবছর সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ। সমগ্র বসুন্ধরার 190 টি দেশ এবার ডিজিটাল মবিলাইজেশনে এই দিবস উদযাপন করবে। এবছরের থিম ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন’। প্রকৃতিবাদী সংগঠন দিশারী সংকল্পও ডিজিটাল মবিলাইজেশনের উদ্যোগ নিয়ে অনলাইন ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল। থিম ছিল মানুষ তুমি বসুন্ধরা বাঁচাও। আর ক্যাচলাইন ছিল লকডাউনে ছবি প্রকৃতির বন্ধু হবি?

আরও পড়তে পারেন…

করোনায় চার দেয়ালে বন্দী শিশুর জীবন!

করোনাকালে চৈত্রসংক্রান্তি ।। সানিয়া আফ্রিন

দিশারী সংকল্প আয়োজিত 22 এপ্রিল বিশ্ব বসুন্ধরা দিবসে আয়োজিত অনলাইন ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় আমরা অভিভূত এই কারণে যে, মাত্র এক দিনের আবেদনে বালুরঘাট তো বটেই, মালদা এমনকি হাবড়া (উত্তর চব্বিশ পরগণা), দমদম, কলকাতা থেকে ক্ষুদে প্রকৃতি বন্ধুদের অপূর্ব সব ছবি এসেছে। আমরা দারুন আনন্দিত।

প্রথমে ঠিক করেছিলাম যে, শুধু প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারী দের ছবি প্রকাশ করবো। কিন্ত ক্ষুদেদের বয়স( পাঁচ থেকে দশ বছর) ও ঘরবন্দী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমাদের সিদ্ধান্ত যে, আমরা যে একসাথে করোনা বিপদের সাথে মোকাবিলা করছি ও করবো তা তখনই সম্ভব হবে যখন আমাদের এই প্রত্যেক খুদেদেরই আমরা বিজয়ী বা বিজয়িনী ঘোষনা করবো। তাই আমাদের ভাবনায় এই অভিনব অনলাইন ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীই জয়ী। ‘All are our Winners’।

আমরা প্রত্যেককে গাছের চারা, দিশারী সংকল্পের স্মারক ট্রফি, শংসাপত্র, আর্ট খাতা, রং- এর বাক্স তুলে দেবো লকডাউন পরবর্তী অধ্যায়ে। তোমাদের সবাইকে নদীমাতৃক সবুজ আদর। প্রকৃতির যথার্থ বন্ধু হও। মানুষ হও। আসুন আমরা প্রকৃতির বন্ধু হই। বসুন্ধরার বন্ধু হই। বাইরে বেরিয়ে বসুন্ধরার জন্য কোন কাজ বা অ্যাকশন না করলেও ঘরে বসেই এখন বসুন্ধরার কথা মনে করার সময়।তাকে ভাল রাখতে কি কি করতে হবে সেটা মনে রাখার সময়।

করোনা ভাইরাস সে সুযোগ দিয়েছে। প্রকৃতির দিকে মুখ তুলে তাকানোর, বসুন্ধরার প্রতি খেয়াল রাখার, দায়িত্ব গ্রহণ করার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। বসুন্ধরাকে ভাল রাখার দায়িত্ব নিতে হবে মানুষকেই।আর সেই দায়িত্ব নিতে হবে ভালবেসে। তাতেই বসুন্ধরার মঙ্গল। আর মঙ্গল মানবজাতিরও।

আরও পড়তে পারেন…

অভিলাষ ।। নাজিয়া বিনতে মুস্তাফিজ

করোনাকালের গল্প।। ফয়সাল আহমেদ

তুহিন শুভ্র মন্ডল : সাংবাদিক, লেখক ও সংগঠক। কলকাতা ভারত।

About the author

নরসুন্দা ডটকম