তখন তুমি ঠোটে গাঢ় করে লাল উপমা লাগিয়ে
চোখের ভিতর থেকে টেনে আনতে চিত্রকল্প
নাকের ভিতর থেকে বের করে সাকার কবিতার লাইনের
ঘ্রাণ এসে তুলে নিতে
তুলি ছাড়াই ছড়াইতে পারতে
উনিশশো তিরিশ দশকের হিউ
তোমার চল্লিশ দশকের কবিতাগুলিতে কিছু
তোমার মুখখানা দেখতে পেয়েছিলাম
নতুন নতুন রেডিও ইমেজে
কত সহজে লিখা যাচ্ছে কবিতা
কত কঠিন লাগতো এক সময়
সেই অতীতে বসে
আজকের দিনের আয়নার কান্ডকারখানা দেখতে
চুন আনানোর পর তা আমাকে লাগালে
কিন্তু কাৎরা শিং এত তীব্র!
জামাই-বউয়ের ভালবাসা না থাকলে
সে ব্যথা কাটে না
রেসিপ্রোকেটিং দিনগুলির সাথে
আজকের সার্কুলার দিনগুলির দেখা হয় কম
হায়রে কয়লা ইঞ্জিনের দিন
হায় ট্রেডল মেশিন!
দিন রাতগুলি দৌড়াচ্ছে
রংধনু থেকে গরিব বেগুনি থেকে
অতিলাল ধনীর বাগানে
সার্কুলার তুমি আমার ঘুরপথে কেন আসো?
তোমাকে তো ভালবাসি নাই
ঈশা খার জঙ্গলবাড়িতে আজ
পঞ্চদশ অধ:বংশের পায়জামা ঝুলতেছে অর্ধবৃত্তাকার বারান্দার ছায়ায়
কবরের ন্যায় কুঠুরিতে
কুলুঙিগুলি ছোট ছোট,
আমার কবিতার বই সহজেই আটানো যায়
ওদের জীবনে ঘুরে ঘুরে জয় পরাজয়ে ছিল
ধাক্কায় ধাক্কায় অশনি সংকেতের জন্ম
আমি বুঝতে পারলাম কেন
আগের লক্ষণ সিং হাজরা
পরের ঈশাখার কাছে পরাজিত হয়ে
মনখারাপ করে ছিল
হে কবি
আপনার উপমার পুত্ররা
বিখ্যাত পিতার পোলাদের সাথে
ঢাল নিয়ে ঘুরাঘুরি করে, দেখে
ঈশাখা-লক্ষণহাজরার কথা মনে হয়
কি যুদ্ধই না তারা করেছিল
একটা পূরানো রাজত্বের সাথে
একটা নতুন রাজত্বের বদলাবদলির সময়
তোমরা বিয়া কর আর হাসো
ফূর্তি কর আর সবাইকে জানাও
মেহেদি দাও
আর সাজো
কিন্তু উর্ধকমা দেহের ভিতর ঘুমাইয়া থাকে
একটু ঘুমাইয়া থাকি
মুখ দিয়া লোল ঝড়ুক
প্রাচীন বিকাল বেলার শীতে
কাচুমাচু হয়ে শুইয়া থাকি
গন্ডগোল হয়ে যাক
পশুপাখি আতর বনবাস
সাদাশিধা সুবাস তন্তু
তপ্তশিখা লাল কদুর
মনভাসা গর্তে ছোপছোপ
শীতের বিকালে
কমা আর সেমিকোলনের সাথে
শরীরের গর্তগুলিও
ফোপাইয়া ফোপাইয়া কান্দে
দেহের বাষ্পগুলি
উড়ে উড়ে কুয়াশা
ভেদ করে
কার ভিতর দিয়া
যেন উর্ধকমার কাছে পৌছাতে চায়
পরাজয় দিঘিতে আজ
চিৎ হয়ে ভেসে আছি
আমরা পরাজিত উপমার দল
উপমিত হয়ে রইলাম
উপমান হৈতে পারি না
কাজল শাহনেওয়াজ: কবি ও গল্পকার।