দেশ-বিদেশ

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর উইনি মাদিকিজেলা-ম্যান্ডেলা

নরসুন্দা ডটকম   এপ্রিল ৩, ২০১৮
উইনি মাদিকিজেলা-ম্যান্ডেলা

মাদিকিজেলা-ম্যান্ডেলা, ১৯৩৬ সালে দেশটির তৎকালীন ট্রান্সকেই (যা এখন ইস্টার্ন কেপ)- এ তার জন্ম হয়। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কালো প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার সাবেক স্ত্রী।

বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের কারণে নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তিনিও কারাবন্দী হন এবং প্রায় তিন দশক ধরে তারা ছিলেন বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রতীক। যদিও পরবর্তীতে নানা আইনি ও রাজনৈতিক জটিলতায় তার সে সুনাম অনেকটাই ক্ষুন্ন হয়েছে।

তিনি ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনীতির অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তি। দেশটির বহু মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ‘জাতির মাতা’। তিনি একজন প্রশিক্ষিত সমাজসেবী ছিলেন, এবং কাজ করতে গিয়েই ১৯৫০ সালে তার সঙ্গে নেলসন ম্যান্ডেলার পরিচয় হয়। নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তার বিয়ে ৩৮ বছর টিকে ছিল।

যদিও নেলসন ম্যান্ডেলার দীর্ঘ কারাজীবনের কারণে তাদের দাম্পত্যের বড় সময়টিই তার পরস্পরের থেকে দূরে ছিলেন।

১৯৯৬ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। নেলসন ম্যান্ডেলা যখন জেলে যান, উইনি বর্ণবাদ বিরোধী লড়াই চালিয়ে যান।

নেলসন ম্যান্ডেলার যেদিন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হয়, সেদিন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে উইনি বলেছিলেন, “আমার এবং আমাদের কারোই কখনো আশা ছাড়া উচিত হবেনা। আসলে আমি মনে করি এ আন্দোলন চলতেই থাকবে।”

যদিও পরে তিনি নানারকম স্ক্যান্ডাল ও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তার অনেক বক্তব্য নিয়েই বিতর্ক আছে।

যেমন, নেকলেসিং নামে এক চর্চার তিনি প্রশংসা করেছিলেন বলে শোনা যায়, যে প্রথায় সন্দেহভাজন তথ্য পাচারকারীর গলায় জ্বলন্ত টায়ার ঝুলিয়ে দেয়া হত।

এছাড়া আশির দশকে তিনি এএনসির অন্য সদস্যদের নিয়ে তিনি সোয়েতোর এক অংশে ত্রাসের রাজত্ব কয়েক করেছিলেন বলেও শোনা যায়।

১৯৯১ সালে অপহরণের দায়ে তার সাজা হয় এবং ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।

আপীলের পরে যদিও সে দণ্ড কমিয়ে তাকে জরিমানা করা হয়। ২০০৩ সালে ব্যাংক ঋণ সংক্রান্ত ঘটনায় প্রতারণার অভিযোগে তার সাজা হয়।

কিন্তু এসবের পরেও তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর ভাবা হয়।

এবং তিনি সব সময় গরীব কালো দক্ষিণ আফ্রিকানদের জন্য কথা বলেছেন।

তিনি সবসময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থেকে গেছেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এএনসির একজন সংসদ সদস্য ছিলেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা এবং সাবেক ফার্ষ্টলেডি উইনি মাদিকিজেলা-ম্যান্ডেলা ৮১ বছর বয়সে মারা গেছেন।

About the author

নরসুন্দা ডটকম