কলকাতা শহরের একটি শপিং সেন্টারে একজন নারী তার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে গেলে ওই মলের কর্মকর্তারা তাকে “ঘরের কাজ ঘরে করুন” বলার পর সেটা নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে।
সাউথ সিটি মলের পেজে এক নারী অভিযোগ করেন যে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্যে ওই সেন্টারে আলাদা কোন জায়গা নেই।
জবাবে শপিং সেন্টারের পক্ষ থেকে ফেসবুকে ওই মন্তব্য করা হয়। তাদের সেই জবাব মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
মল কর্তৃপক্ষ ‘রূঢ়’ এই পোস্টের জন্যে একটি সোশাল মিডিয়া এজেন্সিকে দায়ী করেছে।
প্রথমে অভিলাষা অরূপ দাশঅধিকারী গত মঙ্গলবার তার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন। সাউথ সিটি মলের ফেসবুক পাতায় তিনি লেখেন যে স্তন্যপান করানোর জন্যে সেখানে নির্ধারিত কোন জায়গা নেই।
তিনি আরো লিখেছেন, মলের কর্মচারীরা তাকে বলেছিলেন টয়লেটে গিয়ে তার শিশুকে স্তন্যপান করাতে।
একারণে তিনি শপিং মলটির সমালোচনা করেন এবং কম রেটিং দেন।
তারপর ওই পেজের ম্যানেজার জবাব দিতে গিয়ে লিখেছেন যে দোকানে স্তন্যপান করানোর অনুমতি নেই। মিজ দাশঅধিকারীর উচিত ছিল আগেই তার দিনের একটা পরিকল্পনা তৈরি করা যাতে তার শিশুকে যেকোন সময় স্তন্যপান করাতে না হয়।
তারপর ওই পোস্ট এবং মন্তব্য ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার একটি স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
সঞ্চারী সেনগুপ্তা নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, “আমাদের আধুনিক উন্নত শহর কোলকাতার ঘটনা। সাউথ সিটি মলে একজন মা যে তাঁর সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতে বাধা প্রাপ্ত হলেন, এটি নিন্দনীয় শুধু নয়, অত্যন্ত অনধিকার চর্চা, কুরুচিপূর্ণ, অসম্মানজনক কাজ। একজন শিশুর খাওয়াকে এভাবে প্রাইভেসির, বা পাবলিক এরিয়ার দোহাই দিয়ে আটকে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হওয়া উচিত।”
এরকম বহু মন্তব্য ও হৈচৈ শুরু হওয়ার পর সাউথ সিটি মল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। বলেছে, তাদের মলের প্রত্যেক তলায় শিশুকে খাওয়ানো ও কাপড় বদলানোর জন্যে নির্ধারিত কক্ষ রয়েছে।
শপিং সেন্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনমোহন বাগরি টাইমস অফ ইন্ডিয়া সংবাদপত্রকে বলেছেন, মিজ দাশঅধিকারীর মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন যে সোশাল মিডিয়া এজেন্সি তাদের ফেসবুক পাতা পরিচালনা করে তাদেরই একজন কর্মকর্তা।
“আমাদের মতামত না নিয়েই এই রুঢ় ও আক্রমণাত্মক জবাব দেওয়া হয়েছে। ওই এজেন্সিকে আমরা বাদ দিয়ে দিয়েছি,” বলেন তিনি।
কিন্তু সাউথ সিটি মলের ফেসবুক পাতায় এখনও লোকজন ওই সেন্টারের সমালোচনা করে মন্তব্য করে যাচ্ছেন।
অয়ন ভট্টাচার্য নামে একজন লিখেছেন, “শিশুর কখন খিদে পাবে কে বলবে? কে ঠিক করে দেবে সন্তান তার মায়ের দুধ খাবে কখন?? সাউথ সিটি মল স্তন্যপান করাতে দিল না। বলল টয়লেটে গিয়ে করান। বলল বাড়িতে করুন বাড়ির কাজ।”
অনুপমা তরফদার লিখেছেন, “হ্যাঁ এটাই হলো মল কালচার… শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করানোকেও কুনজরে দেখা হচ্ছে… টয়লেট দেখানো হচ্ছে… দুর্ভাগ্যজনক…।” সূত্র: বিবিসি বাংলা।