ফিচার

সংসারে বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক সুন্দর শান্তিপূর্ণ রাখার উপায়

নরসুন্দা ডটকম   এপ্রিল ২, ২০১৮
বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি কিংবা পারিবারিক কোনো দ্বন্দ্বে অনেক ক্ষেত্রেই বউ-শাশুড়ির সম্পর্ককে দায়ী করা হয়৷ আর তাই বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক সুন্দর রেখে সংসারে শান্তি বজায় রাখার কিছু উপায় জানিয়েছেন এক জার্মান বিশেষজ্ঞ ৷

শাশুড়ির মনোভাব: বিয়ের আগে পর্যন্ত ছেলের ওপর মায়ের কর্তৃত্ব থাকে৷ কিন্তু ছেলের বিয়ের পর মা মনে করেন, তাঁর আদরের সন্তানটি বুঝি হাতছাড়া হয়ে গেল৷ অনেক মা মনে করেন, ছেলে বিয়ে করায় সংসারে তাঁর নিজের মূল্য কমে গেছে৷ মায়েদের এ মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে৷

বউয়ের ব্যক্তিস্বাধীনতা: বউ কী করে, কোথায় যায়, কোথায় বেশি পয়সা খরচ করে, তার বন্ধুরা কেমন ইত্যাদি বিষয়ে শাশুড়ির জানার আগ্রহ প্রচণ্ড, যা কিনা বউয়ের মনে বিরক্তির উদ্রেক করে৷ এ যুগের অনেক বউই চান, স্বাধীনভাবে চলতে, কিন্তু শাশুড়ির ব্যবহারের কারণে তা অনেক সময় সম্ভব হয় না৷ বউ বাড়িতে না থাকলে অনেক শাশুড়ি তো ছেলের বউয়ের অনুপস্থিতিতে তাঁর জিনিসপত্রও ঘাঁটাঘাটি করেন!

বউকে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: শাশুড়িকে শ্রদ্ধা করুন এবং তা তাঁকে বুঝতে দিন৷ তবে কখনো সেরকম ভালোবাসা আশা করবেন না, যা আপনার মা-বাবা আপনাকে দিয়েছে৷ হ্যাঁ, বউদের এই পরামর্শই দিয়েছেন পরিবার বিষয়ক জার্মান বিশেষজ্ঞ ইংগ্রিড রট৷ কিছুতেই মেনে নেওয়া সম্ভব না হলে কি করণীয়?

বিয়ের পর স্বামীকে সব স্ত্রী-ই পুরোপুরি নিজের মতো করে পেতে চান৷ আর সেই জায়গায় ভাগাভাগির বিষয়টি কোনোভাবে মাথায় এলেই বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে৷ এ পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই শাশুড়ির সাথে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব না হলে দূরত্ব বজায় রাখুন এবং সেকথা শাশুড়িকে সরাসরি জানিয়ে দিন৷ তখন শাশুড়ির কোনো পরামর্শ পছন্দ না হলেও চুপ করে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ৷

বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক

শাশুড়ি যা ভাবেন:
বিয়ের পর ছেলে আর আগের মতো মায়ের খোঁজ নেয় না বা আগের মতো সখের খাবারগুলো খায় না– অনেক মা-ই এমন ভাবেন৷ ছেলের জীবনযাপন বা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসা একেবারেই স্বাভাবিক৷ অথচ ছেলেকে
বুঝতে খানিকটা ভুলই করেন মা৷ কারণ, নতুন জীবনে পরিবর্তন আসবে এটাই বাস্তব৷ তা মেনে নিলেই কিন্তু আবার সংসারে সুখ ফিরে আসতে পারে৷

শ্রদ্ধাবোধ : ছেলে ভালো থাকুক, সুখে থাকুক, তা পৃথিবীর সকল মা-ই চান৷ কাজেই ছেলের মতামতের প্রতি মায়ের শ্রদ্ধা রাখা দরকার৷ রাগারাগি বা অভিমান না করে সমস্যা নিয়ে বউয়ের সাথে সরাসরি কথা বলুন৷ এ যুগের আধুনিক এবং শিক্ষিত মেয়েরা অবশ্যই তা বুঝবে৷ যে কোনো সম্পর্কে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা অনেক বড় বিষয়৷

বউ শাশুড়ির দ্বন্দ্ব:
বউ-শাশুড়ি ‘বেস্টফ্রেন্ড’ হবেন তা ধরে না নেয়াই ভালো৷ যে শাশুড়ি নিজের শাশুড়ির কাছে খারাপ ব্যবহার পেয়েছেন, তাঁর তো নিজের বৌমা যাতে একই আচরণের শিকার না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকাই উচিত৷ কারণ, সময় পাল্টে গেছে, সময়ের সাথে মানিয়ে চলতে পারলে নিজেরই সুখ৷

আজকের নারী : আজকের যুগের নারীদের অনেকেই চাকরিজীবী, তাই সবকিছু সামলে নিয়ে আগের দিনের মতো শাশুড়ির সেবা করা তাঁদের জন্য বেশ কঠিন৷ সেটা শাশুড়িকে বুঝতে হবে৷ আবার বউকেও বুঝতে হবে, শাশুড়ির দিকে মাঝে মাঝে কিছুটা মনোযোগ দেওয়া উচিত, বিশেষ করে ছুটির দিনে৷ তাছাড়া সময় পেলে শাশুড়ির সাথে গল্প করুন, শপিংয়ে যান কিংবা কোনো উপলক্ষে তাঁকে উপহার দিন৷ এতে সম্পর্ক সুন্দর হবে৷

About the author

নরসুন্দা ডটকম